এই সময়, বহরমপুর: তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীকে ‘আক্রমণ’-এর অভিযোগে বহরমপুর থানায় ডেকে অধীর চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। গত ১৩ এপ্রিল বহরমপুরের নতুনবাজার এলাকায় এক তৃণমূল কর্মী গো-ব্যাক শ্লোগান দেওয়ায় মেজাজ হারিয়ে তাঁকে মারতে উদ্যত হন বলে অভিযোগ। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে সেই ছবি।কয়েক দিন আগে শক্তিপুরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের দেখতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন অধীর। ধস্তাধস্তিও হয় বলে অভিযোগ। দু’টি ক্ষেত্রেই বহরমপুর থানায় মামলা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বহরমপুর থানায় ডেকে পাঠানো হয় বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীকে।
পুলিশের অতি সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, বহরমপুর থানার পুলিশ যদি শহরের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে এ ভাবে সক্রিয় হলে খুবই ভাল হতো। এ দিন সকাল দশটা নাগাদ বহরমপুর থানায় পৌঁছন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। থানার ঢোকার মূল গেটের বাইরে নিরাপত্তায় থাকা পুলিশকর্মীরা তাঁকে গাড়ি বাইরে রেখে হেঁটে যেতে বলেন।
গাড়ি থেকে না নেমে পুলিশ সুপারকে ফোন করেন অধীর। এরপর গাড়ি নিয়ে সোজা থানার সামনে হাজির হন তিনি। বহরমপুর থানায় তদন্তকারী অফিসার সুদীপ চক্রবর্তীর ঘরে আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে ঢোকেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। মিনিট ২০ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কী ঘটনা ঘটেছিল, কেন মারতে উদ্যত হয়েছিলেন, এই সব বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে।
কিন্তু তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন তাঁর আইনজীবী জবাব দেবেন। এরপরেই কাগজে সই করে থানা ছেড়ে বেরিয়ে চলে আসেন। থানা থেকে বেরিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘তৃণমূলের আদেশে আমাকে হেনস্থা করার জন্য পুলিশ এসব কাজ করছে। আমার প্রচারে বারবার তৃণমূলের লোকেরা বাধা সৃষ্টি করছে। আমি আইন মেনে চলি। আমি চাইব, সকলের জন্য আইন সমানভাবে প্রয়োগ হোক।’
তাঁর বক্তব্য, ‘তিলকে তাল করছে বহরমপুর থানার পুলিশ। এত বড় অন্যায় করে ফেলেছি আমি যে, থানায় হাজিরা দিয়ে তার ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে!’ লোকসভা ভোটের আগে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বহরমপুর পুরসভার পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘নিজের হার নিশ্চিত জেনে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন অধীর চৌধুরী। সেই কারণে প্রচারে বেরিয়ে যেভাবে মেজাজ হারাচ্ছেন সেটা বাঞ্ছনীয় নয়।’