• ৪০০ উধাও, বিদ্বেষ ভাষণে মেরুকরণের হুঙ্কার মোদির
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ৪০০ পার নিয়ে আর উচ্চবাচ্য নেই। বরং চেনা মেরুকরণের হুঙ্কার এবার শোনা গেল নরেন্দ্র মোদির গলায়। বিদ্বেষ ভাষণে সরাসরি তিনি নিশানা করলেন দেশের সংখ্যালঘু নাগরিক এবং বিরোধীদের। রবিবার রাজস্থানের সভায় মোদি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, ‘বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে আপনাদের সম্পদ মুসলিম, ঘুসপেটিওদের (অনুপ্রবেশকারী) মধ্যে বিলিয়ে দেবে। শহুরে নকশালরা মা-বোনদের মঙ্গলসূত্র পর্যন্ত ছাড়বে না।’ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও অবশ্য নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে একটি শব্দও খরচ করেনি। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম—প্রত্যেক বিরোধী দল এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিকেলে কমিশনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানায় কংগ্রেস। প্রতিনিধিদলে ছিলেন প্রাক্তন এমপি অভিষেক মনু সিংভি এবং কংগ্রেস সভাপতির উপদেষ্টা গুরদীপ সপ্পল। নানা ইস্যুতে তথ্য-প্রমাণ সহ ১৭টি অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগ শোনার পরও কমিশনের ফুল বেঞ্চ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। মোদি অবশ্য সোমবার খানিক ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা চালিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু প্রভাবিত আলিগড়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, হজযাত্রার জন্য কী কী করেছেন। এদিনও তিনি ‘সম্পদ বিলি’র ইস্যু নিয়ে হুঙ্কার দিয়েছেন। তবে সেই সম্পদ বিরোধীরা মুসলিমদের মধ্যে বণ্টন করবে বলে যে অন্ধ মেরুকরণের ভাষণ রবিবার তিনি দিয়েছিলেন, সেটুকু এড়িয়ে গিয়েছেন মোদি। 

    তাতে অবশ্য খুব একটা প্রলেপ পড়েনি। কারণ, মেরুকরণের শেষ তাস মোদি খেলে ফেলেছেন। বিরোধীদের কটাক্ষ, ৪০০ পার যে হচ্ছে না, সেটা কি প্রধানমন্ত্রী বুঝে গিয়েছেন? তাই কি মরিয়া হয়ে হিন্দু ভোট এককাট্টা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি? মনু সিংভি বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে প্রধানমন্ত্রী পদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্রের প্রসঙ্গ তুলে অহেতুক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা চাই কমিশন কড়া ব্যবস্থা নিক।’ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সরাসরি মোদিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলে তোপ দেগেছেন। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেবন্ত রেড্ডি বলেছেন, ‘হেরে যাওয়ার ভয়ে এসব বলছেন মোদি।’ একই ভাষায় মোদিকে আক্রমণ করেছেন আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংও। এখানেই শেষ নয়, নির্বাচন কমিশনের উপর এই ইস্যুতে চাপ তৈরি করতে আম জনতাকেও আসরে নামার ডাক দিয়েছে বিরোধীরা। বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনে ই-মেল করে প্রতিবাদ জানান। মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’র এক নেতা জানান, বিরোধীরা আলোচনা করেই এই অভিনব স্ট্র্যাটেজি নিয়েছে। সব সময় তো রাজনৈতিক দলই অভিযোগ জানায়। এবার সাধারণ মানুষের পালা।
  • Link to this news (বর্তমান)