• ম্যাচ ফিক্সিং? ভোটের আগেই সুরাতে বিজেপির জয়ে বিতর্ক
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: ভোটগ্রহণের কথা ছিল আগামী ৭ মে। কিন্তু সেই ভোট দিতে পারল না সুরাতবাসী। তার আগেই মোদি-রাজ্য গুজরাতের আসনটি চলে গেল বিজেপির ঝুলিতে। রবিবারই বাতিল হয়েছিল কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়ন। হাত শিবিরের ‘ডামি’ বা বিকল্প প্রার্থীর সম্ভাবনা খারিজ করে দেয় নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং অফিসার। বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইতে বাকি ছিলেন বিএসপি, নির্দল সহ ৮ জন। কোনও অজানা কারণে সোমবার প্রত্যেকেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। আর তার জেরেই এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম আসনটি জিতে নিলেন গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী মুকেশ দালাল। তাতেই বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’-এর অভিযোগে সরব হয়েছে কংগ্রেস। গোটা ঘটনা পরম্পরা উস্কে দিয়েছে সাম্প্রতিককালের চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচনের ‘কালো’ স্মৃতি। গত ৩০ জানুয়ারি সেই ভোটে রিটার্নিং অফিসারের মাধ্যমে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্টে খরিজ হয়ে যায় সেই নির্বাচন। সেকথা মনে করিয়ে সুরাতের ঘটনায় রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গুজরাতের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শক্তি সিং গোহিল। দলের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র জয়রাম রমেশ আবার ‘এক্স’ হ্যান্ডলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে—‘গণতন্ত্র আজ গভীর সঙ্কটে। আপ ক্রোনোলজি সমঝিয়ে (আপনারা ঘটনাক্রম বোঝার চেষ্টা করুন)!’

    গুজরাতের ২৬টি লোকসভা আসনেই ভোটগ্রহণ হবে ৭ মে। গত শুক্রবার ছিল মনোনয়নের শেষ দিন। শনিবার হয় ‘স্ক্রুটিনি’। তারপরই সুরাতের কংগ্রেস প্রার্থী নীলেশ কুম্ভানির প্রস্তাবকদের স্বাক্ষরে গরমিলের কারণ দেখিয়ে মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশ দেন রিটার্নিং অফিসার। এক্ষেত্রে স্বয়ং প্রস্তাবকরা জানান, সইগুলি তাঁদের নয়। একইভাবে বাতিল হয় ওই কেন্দ্রে কংগ্রেসের বিকল্প প্রার্থী সুরেশ পাডশালার মনোনয়ন। হাত শিবিরের কোনও আবেদনেই আমল দেওয়া হয়নি। সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ভোট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন বিএসপির পেয়ারেলাল ভারতী সহ ওই কেন্দ্রের বাকি ৮ প্রার্থী। ফলে, বিজেপির মুকেশের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের শংসাপত্র ইস্যু হতে দেরি লাগেনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অভিনন্দন জানান গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সি আর পাতিল। ‘এক্স’ হ্যান্ডলে পাতিল লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রথম পদ্মটি তুলে দিল সুরাত।’

    গোটা বিষয়টিকে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ বলেই বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোহিল। বিরোধীদের মতে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় শাসক গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে মাঝারি শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ভোটে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ করে নিল বিজেপি। যদিও তাদের জবাব দিয়েছেন গুজরাতে মোদির দলের মিডিয়া সেলের প্রধান জুবিন আশারা। ‘এক্স’ হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘আরবান নকশালরা কি জানেন, ১৯৫১ সালের লোকসভা নির্বাচনে ১০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিলেন। পরেরবার সংখ্যাটা বেড়ে হয় ১১। তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন স্বয়ং জওহরলাল নেহরু!’
  • Link to this news (বর্তমান)