বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন মামলায় পতঞ্জলি আয়ুর্বেদকে ফের তিরস্কার সুপ্রিম কোর্টের। 'সংবাদপত্রে গোটা একটা পাতা জুড়ে যখন বড় বড় হরফে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল সংস্থা, এবার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতেও কি ততটাই জায়গায় ব্য়বহার করা হয়েছে?' প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের।বিভ্রান্তিরকর বিজ্ঞাপন মামলায় পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা রামদেব ও বালকৃষ্ণের হয়ে লড়ছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী মুকুল রোহতগি। মঙ্গলবার তিনি আদালতে জানান, ফের সোমবার প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন রামদেব ও তাঁর সহযোগী বালকৃষ্ণ। এরপরই সুপ্রিম বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে কেন আগে ক্ষমা না চেয়ে সোমবার ক্ষমা চাওয়া হল। রামদেব ও বালকৃষ্ণের পক্ষে আইনীজীব রোহতগি আদালতে দাবি করেন, ৬৭টি সংবাদপত্রে ১০ লাখ টাকা খরচ করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন রামদেব ও বালকৃষ্ণ। আর এরপরেই প্রকাশ্য়ে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি হিমা কোহলি প্রশ্ন করেন, 'ক্ষমাপ্রার্থনা কি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে? যতটা বড় বড় হরফে, বিশাল জায়গা জুড়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল এবার কি সংবাদপত্রে ক্ষমাও চাওয়ার ক্ষেত্রেও ততটা বড় হরফ, কিংবা ততটাই বিশাল জায়গা ব্যবহার করা হয়েছে?' প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে লাখ লাখ টাকা সংস্থার তরফে খরচ করা হয়েছে বলে রোহতগি জানালে পালটা শীর্ষ আদালত বলে 'এসব জানতে মোটেও আগ্রহী নয় তাঁরা'।
মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে রামদেবের আইনজীবী বলেন, 'সোমবার একাধিক প্রত্রিকায় ক্ষমাপ্রার্থনা করেছি।' পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ প্রকাশিত এই ক্ষমা প্রার্থনার চিঠিতে বলা হয়েছে, 'পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদার প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের বক্তব্যের পরও বিজ্ঞাপন দেওয়া ও সংবাদ সম্মেলন করার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ভুল না হয় তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আবারও আশ্বস্ত করছি আমরা সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা বজায় রাখব।'
উল্লেখ্য, এর আগেও সুপ্রিম কোর্টে রামদেবের ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাবে সন্তুষ্ট হয়নি। রামদেবের সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। IMA-এর অভিযোগ ছিল, পতঞ্জলির বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে অসম্মান করা হয়েছে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি ও চিকিৎসকদের। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও আনা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, কোভিড প্রতিরোধী না-হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই রামদেবের পতঞ্জলি আড়াইশো কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছিল। আইএমএর অভিযোগ ছিল, এসবের জন্য জন্য 'বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা' বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানো হয়েছিল রামদেবের সংস্থার তরফে। গত বছরের নভেম্বরে মামলাটির শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, 'বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা' বিজ্ঞাপনী প্রচার বন্ধ না করলে জরিমানার মুখে পড়তে হবে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থাকে।