• বাগদায় প্রচারে শান্তনুকে গো-ব্যাক স্লোগান, অবরোধে বিজেপি
    এই সময় | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়, বাগদা: প্রচারে বেরিয়ে বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে গো-ব্যাক স্লোগান শুনতে হলো। অভিযোগ, শান্তনুর গায়ে জলও ছিটিয়ে দেওয়া হয়। পাল্টা বিক্ষোভকারী মহিলাদের উপর বিজেপির কর্মীরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। যা নিয়ে সোমবার ধুন্ধুমার বেধে যায় বাগদার পুরাতনি বাজার এলাকায়।দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। প্রচারে বাধার মুখে পড়ে বনগাঁ-বাগদা সড়কে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন শান্তনু ঠাকুর। পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়। পরে বাগদা থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী এসে অবরোধ উঠিয়ে দেয়। খুনের চক্রান্ত হয়েছিল বলে বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শান্তনু ঠাকুর।

    বনগাঁ পুলিশ জেলার সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘একটা অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’ ভোটের মুখে বাগদার পুরাতনি বাজারের রাধাগোবিন্দ মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর। তখনই পুরাতনি বাজার সংলগ্ন নৃসিংহপুর গ্রামের মহিলারা রাস্তা আটকে তাঁর কাছে কৈফিয়ত তলব করেন। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, উম্পুনের ঝড়ে ঘরের চালটা উড়ে গিয়েছিল তাঁদের।

    গ্রামের স্কুলে ত্রাণশিবিরে পরিবার নিয়ে রাত কাটাতে হয়েছিল। অসহায় পরিবারগুলির পাশে বনগাঁর সাংসদ হিসেবে সেই সময় শান্তনু ঠাকুরকে পাশে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ এ দিনের বিক্ষোভকারী মহিলাদের। করোনা-কালেও সাংসদের অনুপস্থিতির কথা এ দিন বারে বারে বলেছেন মহিলারা। এর উপর মতুয়া কার্ড করার জন্য টাকা নেওয়া নিয়েও এ দিন মহিলারা প্রশ্ন তোলেন।

    বিদায়ী সাংসদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় মহিলারা। অভিযোগ, এরপরেই বিজেপির কর্মীরা বিক্ষোভকারী মহিলাদের ধাওয়া করে। গ্রামের মহিলারাও জল ছুঁড়ে দেন শান্তনু ঠাকুরের দিকে। শান্তনু ঠাকুর গো-ব্যাক স্লোগান ওঠে। গো-ব্যাকের পাল্টা বিজেপি কর্মীরাও চোর-চোর বলে স্লোগান দিতে থাকে। এরপরেই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে।

    দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে ইট ছোড়ে বলেও অভিযোগ। এ দিনের সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই কয়েকজন জখম হয়েছেন। আহতদের প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বাগদা গ্রামীণ হাসপাতালে। পরে স্থানান্তরিত করা হয় বনগাঁ হাসপাতালে। আন্দোলনকারী মহিলাদের দাবি, তাঁরা কোনও দলের পতাকা বা প্রতীক নিয়ে যাননি। বরং এর আগে তাঁরা ভোট দিয়েছিলেন শান্তনুকেই। কিন্তু পাঁচ বছরে উনি বাগদায় আসেননি।

    উম্পুন, কোভিডের সময়েও সাংসদকে পাশে পাওয়া যায়নি। বিক্ষোভকারী মহিলারা তৃণমূলের লোকজন বলে অভিযোগ বিজেপির। শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘তৃণমূলের ভাড়া করা গুন্ডাবাহিনী প্রচারে বাধা দিয়েছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে সব কিছু দেখেছে। আমাকে প্রাণে মারার পরিকল্পনা করেছিল তৃণমূল। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’

    বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘উনি কোনও উন্নয়নের কাজ করেননি। গ্রামের মহিলারা তা নিয়ে অসন্তুষ্ট। এখানে তৃণমূলের কোনও ভূমিকা নেই।’ ছক কষে প্রচারে বাধা ও হামলার অভিযোগ তুলে এ দিন বনগাঁ-বাগদা রাজ্য সড়কে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন শান্তনু ঠাকুর। বেশ কিছুক্ষণ রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

    বাগদার এসডিপিও শান্তনু ঝাঁয়ের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী এসে অবরোধ তুলে দেয়। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় শান্তনু ঠাকুরের। এই ঘটনার পর, ফিরে আসার সময়ে বনগাঁ বিডিও অফিসের সামনে শান্তনু ঠাকুরের গাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশের বিরুদ্ধে গাড়ি তল্লাশির নামে সময় নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন শান্তনু।
  • Link to this news (এই সময়)