৭ কোটি ঋণের টাকা কীভাবে ফিরবে' চাকরিহারাদের লোন শোধ নিয়ে প্রমাদ গুণছে ব্যাংক!
২৪ ঘন্টা | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
প্রদ্যুত দাস: কোর্টের নির্দেশে হাজার হাজার স্কুল শিক্ষকের লোন ফেরত নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ধুপগুড়িতেই ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারালেন প্রায় ২৬০০০ শিক্ষক। যা বড়সড়ো প্রভাব ফেলবে দেশের অর্থনীতিতে। যার প্রভাব সব থেকে বেশি ভাবে পড়বে ব্যাংকগুলিতে। প্রসঙ্গত, লোন প্রদান করার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি সুবিধা থাকতো সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে। যেহেতু তারা সরকারি কর্মচারী তাই অনায়াসে ব্যাংক থেকে লোন পেত তারা এবং সেই লোনের টাকা ফেরতের নিশ্চয়তা থাকত প্রায় ১০০ শতাংশ।
ব্যাংক সূত্রে খবর, পে স্লিপের মত একান্ত নথি ছাড়া অন্য কোনও নথি বিশেষ ভাবে দেখা হত না এই সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে। হোম লোন, পার্সোনাল লোন, কার লোন সবমিলিয়ে জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ির রাষ্টায়ত্তক ব্যাংকে স্কুল শিক্ষকদের দেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি। যার মধ্যে ২০১৬ সালের নিয়োগ পাওয়াদের তথ্য মেলেনি। দুশ্চিন্তায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কীভাবে উদ্ধার হবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা। যার জের এই আদালতের নির্দেশিকা যেন আচমকাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বিপদের মুখে ফেলে দিল। শুধুমাত্র ধুপগুড়ির এই রাষ্টায়ত্ত ব্যাংকেই যদি স্কুল শিক্ষকদের নেওয়া লোনের পরিমাণ এত হয়, তাহলে রাজ্যের অন্যান্য ব্যাংকগুলির কী অবস্থা হতে পারে। ভেবেই রীতিমতো শিহরিত অর্থনীতিকরা। পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলো তো রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে সবমিলিয়ে হিসেবটা ১০০ কোটি ছাড়াবে। এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত খতিয়ে দেখার দাবি করছে।এখানে দাঁড়িয়েই প্রশ্ন উঠছে সরকার নিশ্চয়তা দেওয়ার পরেও আদালত ২০১৬ সালের নিয়োগে অবৈধ বলছে কেন? তবে এরপরে আলাদা করে আর কীভাবে আবেদনকারীর বৈধতা যাচাই করবে এই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ? আদৌ কি তা সম্ভব? তবে এই লোন যদি নিয়েই থাকে তা পরিশোধ করবে কীভাবে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। চাকরি বাতিলের এই সমস্যা নিয়ে পুরো শিক্ষক সমাজেই যেন ব্যাংক স্ক্যানারে চলে আসবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এরপর ব্যাংক থেকে যারা বৈধ চাকরি প্রাপক, তাদেরও লোন পেতে সমস্যা হবে। শিক্ষক সমাজের চরম অপমান বলেই মনে করছে শিক্ষক মহল। এই এতজন শিক্ষকের চাকরি বাতিলে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে বিরাট ধাক্কা খেতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। এমনিতেই রাজ্য শিল্পহীন তার ওপর অর্থনৈতিক ধাক্কাটা কতটা সামলে নিতে পারবে, কর্মহীন শিক্ষকদের লোনের দায়িত্বটা কি তবে নেবে রাজ্যের সরকার, এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা মহলে।