অর্ণবাংশু নিয়োগী: 'যেখানে মানুষ ৮ ঘণ্টা শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করতে পারে না, সেখানে এই মুহূর্তে ভোটের প্রয়োজন নেই'। মুর্শিদাবাদে রামনবমীর মিছিলে অশান্তিতে কড়া মনোভাব কলকাতা হাইকোর্টের। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, 'নির্বাচন কমিশনকে বলব বহরমপুরে নির্বাচন যেন পিছিয়ে দেওয়া হয়'!
ফের রামনবমীর মিছিলে অশান্তি। এবার মুর্শিদাবাদে। NIA তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের বক্তব্য,'গত বছর রামনবমীর মিছিলে ছড়িয়ে পড়েছিল হাওড়ায়। সেই ঘটনার তদন্ত করছে NIA। এবার একইভাবে অশান্তি ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদে। যাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে অশান্তি ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন তদন্ত করতে পারবে না। NIA-কে তদন্তভার দেওয়া হোক'।কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, 'বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদোৎসব, দুর্গাপুজো। দুর্গাপুজোয় কোটি কোটি মানুষের সমাগম হয়, সেখানে কোনওদিন গুন্ডামি, তাণ্ডব হয়নি। কালীপুজোয় কালীঘাটের মন্দির, দক্ষিণেশ্বর, তারা মায়ের মন্দিরে কোটি কোটি দর্শকের সমাগম হয়, গুন্ডামি হয়নি। ক'দিন আগে ইদ গেল, কোনও অশান্তি হল না। পার্কস্ট্রিটে ক্রিসমাস কার্নিভাল হয়। সমস্ত ধর্মের উৎসবে কোথাও কোনও অশান্তি হয় না'।অরূপের দাবি, '২০১৪-র পরে রামনবমীকে কেন্দ্র করে, প্রতিক্ষেত্রে গুন্ডামি, এই গুন্ডামি কারা করছে, তারজন্য রাজনৈতিক কর্মী হতে হয় না। পরিষ্কার সাদা চোখে সেটা বোঝা যায়। ভারতীয় জনতা পার্টি, দাঙ্গা লাগালে একটা রাজনৈতিক দলেরই লাভ হয়। আর যদি রাজনৈতিক দল পরিকল্পিতভাবে অশান্তির আগুন লাগায়, আর তার জন্য় নির্বাচন পিছিয়ে দিতে হয়। তাহলে আর নির্বাচন করার দরকার কী! রাজনৈতিক দল যেখানে তাঁদের অসুবিধা থাকবে, সেখানে দাঙ্গা লাগাবে'!তৃণমূল নেতার আরও বক্তব্য, 'আসলে আমাদের বিচারব্যবস্থার প্রতি সম্মান আছে। কিন্তু কোনও কোনও বিচারপতি, আবার দ্বিতীয় অভিজিৎ গাঙ্গুলি হতে চাইছেন, অভিজিৎ গাঙ্গুলি তো রাস্তাটা দেখিয়ে দিয়েছেন। বিচারপতি থাকাকালীন বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যায় এবং তার বিনিময়ে পুরষ্কৃত হওয়া যায়। আমাদের বক্তব্য, নির্বাচন মানে রাজনৈতিক লড়াই। রাজনৈতিক লড়াইয়ে না পেরে এইস অশান্তি করে ভোট পিছানো মানে নির্বাচনের আগেই মানুষ রায় বুঝতে পেরে গিয়েছে যে, তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে পরাজিত হবে'।এদিকে হাওড়ার এবছর শর্তসাপেক্ষে রামনবমীর মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল হাইকোর্ট। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ ছিল, 'রাজ্যের যে কোনও জায়গায় ২০০ জন মিছিল করলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্রয়োজনে কেন্দ্রের কাছে বাহিনী চাইতে পারবে রাজ্য'।