রাজনীতির অলিন্দে থাকলেও বরাবরই ‘ব্যতিক্রমী’ তিনি। একজন রাজনীতিক হিসেবে তাঁর বক্তব্য-ব্যবহার বিরোধীরাও সমাদৃত করেন। তিনি, ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেব। এবার তাঁর কাণ্ড দেখে হতবাক বিজেপি কর্মীরাও। দেব বুঝিয়ে দিলেন, রাজনীতিতে দ্বেষ-হিংসার কোনও জায়গা নেই, আছে সৌজন্যতার জায়গায়।উত্তরবঙ্গে ভোট প্রচারে আসতেই দেবকে ঘিরে জয় শ্রী রাম স্লোগান দেন কিছু বিজেপি কর্মীরা। বিমানবন্দর থেকে বের হচ্ছিলেন দেব। তখনই পাশ থেকে কিছু বিজেপি কর্মী তাঁকে দেখে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেন। পাল্টা দেব যা করলেন, তাতে বিজেপি কর্মীও চুপ হয়ে যান। যিনি স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন দেব।
মঙ্গলবার সকালে রায়গঞ্জ ও বালুরঘাটে প্রচারের জন্য শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামেন দেব। এরপর বিমাবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় তাঁকে দেখে এক বিজেপি কর্মী জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে থাকেব। এদিকে দেব সেই বিজেপি কর্মীর দিকে এগিয়ে যান। এরপর গলা মিলিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিজেপি কর্মীকে।
এরপরেই দেব বলেন, ‘আগে আমরা ভারতবাসী। তারপর কে হিন্দু, কে মুসলিম। কেউ তৃণমূল বা বিজেপি বা সিপিএম সমর্থিত। আসলে বড় বড় নেতারা বিভাজন করে রেখেছেন। আমার খারাপ লাগেনি। গলা মিলিয়েছি, তারপর উনি চুপ করে গেলেন।’ তাঁর কথায়, এই নির্বাচনে যে জিতুক দেশ যাতে উন্নতি করে তা দেখতে হবে।’
তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে দেব বলেন, ‘মানুষ যেন তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছে। এবারের প্রচার অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছি। ২০১৯ সালে কিছু ভুল হয়েছিল। তবে এবার অনেক ভালো ফল হবে। আসন বাড়বে। দলের হয়ে চাইবো প্রথম দফার ভোটে তিনটি সিট তৃণমূলই জিতুক।'
প্রসঙ্গত, ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান রাজনৈতিক সভা থেকে শুরু করে অন্যত্র দিতে দেখা যায় বিজেপি কর্মীরদের। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে দেখে ‘জয় শ্রী রাম’ দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেও ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে একাধিকবার। ভিক্তোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রধানমন্ত্রী এনং মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানেও ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিয়ে উঠেছিলেন কিছু বিজেপি কর্মীরা। এর প্রতিবাদে সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখা থেকে বিরত থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, আজ দেবকে দেখে এই স্লোগান দেওয়ায় সৌজন্যের প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গেল দেবকে।