২০১৬ সালের এসএসসি-র গোটা প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তার প্রতিবাদে আগেই সরব হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কীর্তি আজাদের সমর্থনে প্রচার সভা থেকে ফের এই বিষয়ে মুখ খুললেন তিনি। একইসঙ্গে নাম না করে নিশানা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে।মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে মমতা বলেন, 'কত লোককে চাকরি দিয়েছেন? ২ কোটি বেকারকে চাকরি দেবেন বলেছিলেন, একটা লোককেও চাকরি দেননি, আজকে ভারতবর্ষের বেকার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, আর আমরা বাংলায় যখন চাকরি দিই, আপনারা কোর্টকে দিয়ে চাকরিগুলো খেয়ে নেন। তার কারণ ওরা তো আমাদের আন্ডারে নয়, আপনাদের আন্ডারে।'
তৃণমূল সুপ্রিমো আরও বলেন, 'আপনারা চাকরি না খেয়ে যদি বলতেন..., আমি রায়দান সম্পর্কে বলছি, বিচারকের নাম আমি বলছি না, আমার প্রয়োজন পড়ে না, যদি বলতেন এখানে অসুবিধা আছে, ভুল হয়েছে, তুমি সংশোধন করে নাও, আমরা করে দিতাম, ভুল তো যে কোনও কেউ করে ফেলতে পারে,সবটা কি আমি করি? আমি করি না। আলাদা শিক্ষা দফতর আছে, এসএসসি আলাদা আছে, প্রাইমারি বোর্ড আলাদা আছে, মাধ্যমিক বোর্ড আলাদা আছে, কলেজ কমিশন আলাদা আছে, যদি আপনার আলাদা বলতেন সেটাও আমরা চেষ্টা করে দেখতাম। আজকে বলুন তো যারা একতরফা রায় দিয়ে ছাব্বিশ হাজার ছেলে মেয়ে চাকরি খেয়ে নিলেন, আর কী বললেন এক মাসের মধ্যে ৮ বছরের মাইনে সুদসহ ফেরত দিতে হবে, যারা রায়টা দিলেন, আমি নাম বলছি না, তাঁদের ঘরের কেউ যদি হত, সরকারি টাকায় চলবে, খাবে, সিকিউরিটি নেবে, আর এক কলমের খোঁচায় সবার চাকরি চলে গেল। আপনার নিজের ছেলেমেয়েদের চাকরি চলে গেলে আপনি ভাবতেন না? একবারও ভাববেন না? আর যদি কোন ছেলে মেয়ে আত্মহত্যা করে, তার দায় কি আপনারা নেবেন?'
আপনার নিজের ছেলেমেয়েদের চাকরি চলে গেলে আপনি ভাবতেন না? একবারও ভাববেন না? আর যদি কোন ছেলে মেয়ে আত্মহত্যা করে, তার দায় কি আপনারা নেবেন?মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এরপরেই ফের একবার চাকরিহারাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, 'আমি সেই জন্যেই বলছি চিন্তা করবেন না আমরা আমাদের সাধ্যমত সমস্ত কিছু চেষ্টা করব, শিক্ষক এবং শিক্ষিকারা আট বছর ধরে স্কুলে চাকরি করছেন, তাঁদের একটা সামাজিক সম্মান আছে। যারা স্কুলে পড়ে তারা কোথায় যাবে? স্কুলগুলোতে মাস্টার কোথা থেকে আসবে? স্কুলে বাচ্চারা গিয়ে বসে থাকবে, ওখানে কি বিজেপির লোকেরা পড়াবে? না আরএসএস পড়াবে?'
একইসঙ্গে নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে মমতা বলেন, 'জিজ্ঞেস করুন বোমা ফাটিয়েছে বোমা! তোরা অনেক বোমা বানাতে শিখেছিস না, মানুষের চাকরি খেয়ে বোমা? ওই বোমা হজম হলে হয়। একদিন বুঝবি, আজকে খুব গায়ের জোর না, বিজেপিতে গিয়ে দালালি করছিস কেন? প্রচুর টাকা করেছিস বলে, পাছে সিবিআই, ইডি, এনআইএ ধরে। সেদিন পুরুলিয়ায় চাকরি কে কী করে দিয়েছিল? আমি নামটা যদি বলি..., নামটা আমি বলব না আপনারা বুঝে নিন। আমার ইশারাই কাফি। যারা টাকা দিয়েছে, তারা ভয়ে মুখ খোলে না, সবচেয়ে বড় কুকর্ম করেছে যে, সে সবচেয়ে বড় গাদ্দার। কোর্ট কি রায় দেবে তুই জানলি কী করে? তুই দু'দিন আগে বলে দিলি বোমা ফাটাব। এতগুলো বাচ্চারা জীবন কেড়ে নিয়ে তুই নাচছিস? নেচে নেচে বেড়া। একদিন মানুষের বাঁধ ভেঙে যাবে।'