হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা একই স্কুলের ৩৬ শিক্ষক-শিক্ষিকা
এই সময় | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। সেই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। চাকরি হারা শিক্ষকদের তালিকায় রয়েছেন মুর্শিদাবারের একটি স্কুলের ৩৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা। ফলে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা একলপ্তে অনেকটাই কমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি পঠনপাঠন কী ভাবে পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর হাইস্কুলের। এই ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে অভিভাবকমহলে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সোহরাব আলি বলেন, 'একসঙ্গে এতজন শিক্ষকের চাকরি চলে গেলে স্কুল চালাতে সমস্যায় হবে। পঞ্চম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত দশ হাজারের অধিক ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। এভাবে স্কুল চালান সম্ভব নয়।'
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবারই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তাতে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। স্কুল শিক্ষা দফতর উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দেখাতে না পারায় ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলটিই বাতিল করা হয়েছে। আর এই প্যানেলেই চাকরি পেয়ে ফরাক্কা থানার অর্জুনপুর হাইস্কুলে নিয়োগ হয়েছিল ৩৬ জন শিক্ষকের। এরমধ্যে ২০ জন শিক্ষক এই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন। বাকি ১৬ জন শিক্ষক মিউচুয়াল ট্রান্সফার নিয়ে এই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে ফরাক্কা থানার অর্জুনপুর হাইস্কুলের ৩৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা চাকরি হারিয়েছেন। বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৬০ জন। সাতজন পার্শ্বশিক্ষকও রয়েছেন। সোমবার ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কার অর্জুনপুর হাইস্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। এদিকে ২০১৬ সালের প্যানেলের তালিকাভুক্ত ছিলেন ৩৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা। কিন্তু আদালতের রায়ে তাঁরা সকলেই বাতিলের তালিকায়। ৩৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা চাকুরি খোয়ানোয় স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। দশ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রীর পঠনপাঠন ২৪ জন শিক্ষক শিক্ষিকা দিয়ে কী ভাবে সম্ভব, তা কার্যত ভেবেই পাচ্ছেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক। অন্যদিকে এতজন শিক্ষক চাকরি হারানোয় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে অভিভাবক অভিভাবিকারাও।
যদিও এসএসসি-র তরফে ইতিমধ্যেই এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয় চাকরিহারাদের ভাগ্য।