সম্পূর্ণা চক্রবর্তী, ভুবনেশ্বরকলিঙ্গ স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরোনোর সময় সমর্থকদের বেষ্টনীতে আটকে পড়লেন আন্তোনিও হাবাস। ক্ষোভ, রাগ দূর অস্থ। বরং বাগানের বর্ষীয়ান কোচের কাছে যুবভারতীতে ফিরতি লেগ জয়ের আর্জি। সাপোর্টারদের আকুতি-মিনতি দেখে আবেগপ্রবণ স্প্যানিয়ার্ড। বাসে ওঠার আগে দাঁড়িয়ে পড়লেন। তারপর সমর্থকদের সঙ্গে বাক্য আবাদপ্রদান। আশ্বস্থ করলেন, ফিরতি লেগে অন্য ম্যাচ হবে। হাবেভাবে বুঝিয়ে দিলেন, এখনও সব শেষ হয়ে যায়নি। যুবভারতীতে ৬০,০০০ সমর্থকদের সামনে খেলার অ্যাডভান্টেজ পুরোদমে তুলতে চান হাবাস। তাই সাপোর্টারদের মাঠ ভরানোর অনুরোধ জানান বাগান কোচ। এক গোল করলে ম্যাচ গড়াবে এক্সট্রা টাইমে। দু"গোল পেলে সরাসরি ফাইনাল। লম্বা ম্যাচের প্রস্তুতি নেবেন লিগ শিল্ড জয়ী কোচ। হাবাস বলেন, "একটা গোল করলেই এক্সট্রা টাইম। আমাদের লম্বা ম্যাচের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েই নামতে হবে। তবে অবশ্যই চেষ্টা করব দুটো গোল করে সরাসরি ফাইনালে যাওয়ার। কলকাতায় আমরা ৬০ হাজার সমর্থকের সামনে খেলব। পরিস্থিতি ভিন্ন হবে। ম্যাচটাও সম্পূর্ণ আলাদা হবে। এটা আমার প্রতিশ্রুতি। আশা করছি আমরা সেদিন জিতে ফাইনালে যাব।" কলকাতা থেকে আসার আগে জানিয়েছিলেন, কোনওভাবেই হারা চলবে না। কিন্তু এদিন কিছু অংশ বাদ দিলে ছন্নছাড়া ফুটবল খেলে বাগান। চ্যাম্পিয়নদের মতো খেলতে পারেনি। ব্যক্তিগত ভুলকেই হারের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন আইএসএলের অন্যতম সেরা কোচ। রক্ষণ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। হাবাস বলেন, "একাধিক ব্যক্তিগত ভুলের খেসারত দিতে হল। অনেক ভুল করেছে ছেলেরা। এত ভুল হলে দল হিসেবে খেলা কঠিন হয়ে পড়ে। লিগ শিল্ড জেতার পর একটা গাছাড়া ভাব চলে এসেছিল। পরের ম্যাচে আমাদের একশো শতাংশ দিতে হবে। তবে সব দিন সমান যায় না। আশা করছি ফিরতি লেগে আমরা এটা বদলাতে পারব। আমাদের রক্ষণ সঙ্ঘবদ্ধ ছিল না। অতিরিক্ত জায়গা দিয়ে ফেলছিল। দু"জন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের মধ্যে গ্যাপ বড় হয়ে যাচ্ছিল। তবে আমি নির্দিষ্ট কারোর ওপর দোষ চাপাতে চাই না। এটা গোটা দলের ব্যর্থতা।" অফ ফর্মে থাকা সাদিকুকে আগেই তুলে নিতে পারতেন। কিন্তু অপেক্ষা করেন। তাহলে হয়তো লালকার্ড বাঁচানো যেত। তবে এর জন্য কোনও আফসোস নেই বাগান কোচের। হাবাস বলেন, "আমার মনে হয় না তাতে কোনও পরিবর্তন হতো। আমরা সাধারণত ৭০-৭৫ মিনিট পর্যন্ত স্ট্রাইকার পরিবর্তন করি না।" এদিন তাঁর পুরোনো ছাত্রই সাজানো বাগান লণ্ডভণ্ড করে দেয়। তবে রয় কৃষ্ণ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি হাবাস। বলেন, "রয় এখন মোহনবাগানের ফুটবলার নয়, ওড়িশার ফুটবলার। তাই ওকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে এইটুকু বলব যে ও খুব ভাল খেলেছে।" ম্যাচ শেষে এদিন কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের বাইরে ভ্রাতৃত্বের ছবি দেখা যায়। সৌহার্দ্য বিনিময়ে করে দুই দলের ফুটবলাররা। স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে রয় কৃষ্ণ, লেনি রডরিগসের সঙ্গে আলাদা কথা বলেন হাবাস।