• 'প্রাক্তনী'র দাপটে ওড়িশার কাছে হার, ফাইনালের অঙ্ক কঠিন হল বাগানের ...
    আজকাল | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • মোহনবাগান - ১ (মনবীর)ওড়িশা এফসি - ২ (দেলগাডো, রয় কৃষ্ণ)সম্পূর্ণা চক্রবর্তী, ভুবনেশ্বরকলকাতার পড়শী শহর। কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের গ্যালারির একাংশ সবুজ মেরুনের দখলে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু গ্যালারিতে বাগান সমর্থকদের যেমন ছাপিয়ে যায় ওড়িশার সাপোর্টাররা, তেমনই ১০০ গজে দিমিত্রি, কাউকোদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেন রয় কৃষ্ণ, মহম্মদ জাহুরা। ঘরের মাঠে এক গোলে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচ ফেরা যেন জলভাত করে ফেলেছে সার্জিও লোবেরার দল। গত পাঁচ ম্যাচে এমন কীর্তি করেছে ওড়িশা। এদিনও তারই পুনরাবৃত্তি। মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে ওড়িশার কাছে ১-২ গোলে হার মোহনবাগানের। ম্যাচের ৩ মিনিটে মনবীরের গোলে এগিয়ে যায় হাবাসের দল। কিন্তু প্রথমার্ধেই সমতা ফেরানোর পাশাপাশি এগিয়ে য়ায় ওড়িশা। প্রাক্তনীই কাটা হয়ে বিধল হাবাসের সাজানো বাগানে।‌ দুর্দান্ত রয় কৃষ্ণ। ম্যাচের সেরাও তিনি। "গুরু" হাবাসের দলের বিরুদ্ধে গোল করে দু"হাত জোড় করে ক্ষমাপ্রার্থী বাধ্য ছাত্র। তবে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হারে ফাইনালের অঙ্ক কঠিন হল মোহনবাগানের। ২৮ এপ্রিল ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে অন্তত দু"গোলের ব্যবধানে জিততে হবে। তবেই সরাসরি ফাইনালের ছাড়পত্র পাবে হাবাসের দল। এক গোলে জিতলে ম্যাচ এক্সট্রা টাইমে গড়াবে। ম্যাচ ড্র হলে বা হারলেই শেষ চার থেকে বিদায় দিমিত্রিদের। মঙ্গল সন্ধেয় ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই ঘটনাবহুল। ভুবনেশ্বর রওনা হওয়ার আগে হাবাস জানিয়েছিলেন, তিন পয়েন্টের লক্ষেই নামবে মোহনবাগান। সেই মতো শুরু থেকেই অলআউট ঝাঁপায় দু"দল। শুরুতে গোলও পেয়ে যায় বাগান। ম্যাচের ৩ মিনিটে দিমিত্রির কর্নার থেকে মনবীরের নিখুঁত হেডে গোল। শুরুর একটা মুহূর্ত বাদ দিলে দু"দলের মধ্যে খানিকটা হলেও আধিপত্য ছিল ওড়িশার। ম্যাচের ১১ মিনিটে সমতা ফেরায় লোবেরার দল। জাহুর কর্নার বক্সে জটলার মধ্যে কার্লোস ডেলগাডোর পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। তার মিনিট খানেক আগেই গোললাইন থেকে বল ফেরত পাঠিয়েছিলেন শুভাশিস। কিন্তু শেষপর্যন্ত পতন রুখতে পারেননি। ম্যাচের ১৪ মিনিটে রয় কৃষ্ণকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন বিশাল কাইত। কিন্তু ওড়িশার পেনাল্টির দাবি নাকচ করে দেন রেফারি। কারণ অফসাইড পজিশনে ছিলেন রয় কৃষ্ণ। ম্যাচের ১৯ মিনিটে রানাওয়াডের শটে গোললাইন সেভ আনোয়ারের। সমতা ফেরানোর পর মুহুর্মুহু আক্রমণ করে ওড়িশা। পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বাগান। এদিন মাঝমাঠে ডাহা ব্যর্থ জনি কাউকো। ভুবনেশ্বরের গরমে নিজের সেরা খেলাটা দিতে পারেননি। তাতেই মাঝমাঠের দখল হারিয়ে ফেলে সবুজ মেরুন। মাঝে মধ্যে কয়েকটা বিক্ষিপ্ত আক্রমণ ছাড়া, দাপট ছিল ওড়িশার। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে হেক্টর ইউস্তের ভুলে দ্বিতীয় গোল হজম করে মোহনবাগান। মাঝমাঠ থেকে একটা লংবল হেড করে নামান রয় কৃষ্ণ। তারপর গতি দিয়ে ইউস্তেকে পরাস্ত করে ডান পায়ের শটে গোল। পুরোনো দলের বিরুদ্ধে গোল করে প্রথমে গ্যালারির সামনে গিয়ে দু"হাত জোড় করেন রয়। তারপর দু"হাত শূন্যে তুলে চলে সেলিব্রেশন। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের সুযোগ পেয়েছিল দু"দলই। কিন্তু রেজাল্টে পরিবর্তন হয়নি। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে গোদের ওপর বিষফোঁড়া।‌ জাহুকে ফাউল করে দ্বিতীয় কার্ড (লালকার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন আর্মান্দো সাদিকু। তবে গোটা ম্যাচে অফফর্মে থাকা সত্ত্বেও কেন এতক্ষণ তাঁকে মাঠে রেখে দিয়েছিলেন হাবাস, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। অনেক আগেই তাঁর জায়গায় জেসন কামিন্সকে নামতে পারতেন। অবশ্য মাত্র ৭ মিনিট দশজনে খেলতে হয় বাগানকে। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লালকার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন কার্লোস দেলগাডো। শেষ ১৬ মিনিট দশজনে খেলে দু"দলই। এদিন দিয়েগো মরিসিওকে ছাড়াই হাবাসের বাগানকে তছনছ করে দেন লোবেরা। চোটের জন্য শেষ ৬-৭ মিনিট খেলেন ওড়িশার তারকা ফুটবলার। 
  • Link to this news (আজকাল)