• সাধ্বী প্রজ্ঞার আসনে প্রাক্তন মেয়রই বাজি পদ্ম শিবিরের
    বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • ভোপাল: মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল পরিচিত দেশের অন্যতম ‘সবুজ শহর’ হিসেবে। একাধিক লেকের উপস্থিতির কারণে এই শহর জনপ্রিয় লেক সিটি বা ‘হ্রদ নগরী’ হিসেবেও। নবাব, বেগমদের ইতিহাসের মতোই ’৮৪-এর ডিসেম্বরের ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতিও এখন ধূলি ধুসরিত। বরং এই শহর এখন গড়ে উঠেছে ‘এডুকেশন হাব’ হিসেবে। এই আসনটি ১৯৮৯ সাল থেকেই রয়েছে বিজেপির দখলে। সেই অর্থে এটি ‘গেরুয়া শিবিরের গড়’ই বটে। গত লোকসভা (২০১৯) নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশে ২৯টির মধ্যে ২৮টি আসনেই জিতেছিল বিজেপি। ব্যতিক্রম ছিন্দওয়াড়া। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের ছেলে নকুলের সৌজন্যে এই আসনে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পেরেছিল কংগ্রেস। এবার কমলনাথের আশা, হাত শিবির অন্তত ১২ থেকে ১৩টি আসন নিজেদের দখলে রাখতে পারবে। যদিও বাস্তবে তা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

    গত লোকসভা নির্বাচনে ভোপাল আসনে বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর বড় ব্যবধানে হারান রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংকে। সাধ্বী পান সাড়ে আট লক্ষেরও বেশি ভোট। সেখানে দিগ্বিজয়ের ঝুলিতে জমা পড়েছিল পাঁচ লক্ষের কিছু বেশি ভোট। এবার দুই শিবিরই তাদের প্রার্থী বদল করেছে। বিজেপির হয়ে লড়ছেন শহরের প্রাক্তন মেয়র অলোক শর্মা। সাধ্বী প্রজ্ঞার কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্য প্রবল অস্বস্তিতে ফেলেছিল গেরুয়া শিবিরকে। সেই কারণেই দল বেছে নিয়েছে অলোক শর্মাকেই। অপরদিকে, কংগ্রেস টিকিট দিয়েছে দিগ্বিজয় ঘনিষ্ঠ অরুণ শ্রীবাস্তবকে। কায়স্থ সম্প্রদায়ের ভোট টানতেই তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। ভোপাল গ্রামীণের জেলা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় দলীয় সংগঠনে অরুণ পরিচিত মুখ। 

    ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ২১ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৬১। শেষ পাঁচটি লোকসভা নির্বাচনে এখানে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল যথাক্রমে ৫৫.১ (১৯৯৯), ৬৫.৪ (২০০৪), ৫১ (২০০৯), ৬৩.২ (২০১৪) ও ৬১.৫ শতাংশ (২০১৯)। তাই, গেরুয়া গড়ে অঘটন ঘটনাই হল কংগ্রেস প্রার্থী অরুণের প্রধান চ্যালেঞ্জ। ভোপাল লোকসভা আসনটি গঠিত সাতটি বিধানসভা আসন নিয়ে — বেরাসিয়া, ভোপাল উত্তর, ভোপাল দক্ষিণ-পশ্চিম, ভোপাল মধ্য, হুজুর, নারেলা ও গোবিন্দপুরা। এর মধ্যে দু’টি বিধানসভা (ভোপাল উত্তর এবং ভোপাল মধ্য) রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। মুসলিম ও অনগ্রসর শ্রেণির পাশাপাশি শহরতলি ও গ্রামীণ এলাকার ভোট পেতে মরিয়া কংগ্রেস। কিন্তু, তা বিজেপির রথকে কতটা ঠেকাতে পারে, সেই উত্তর সময়ই দেবে।
  • Link to this news (বর্তমান)