• শহর ‘হিট আইল্যান্ড’ দায়ী কংক্রিটের জঙ্গল
    বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এই অসহ্য, গায়ে জ্বালা ধরানো গরমের অন্যতম কারণ কংক্রিটের জঙ্গল। নগরায়ণ। পরিবেশবিদরা এরকমটাই মনে করছেন। শহরজুড়ে বাড়তে থাকা ফ্ল্যাট, বাড়ি, বহুতলগুলির কংক্রিট বাতাস থেকে ক্রমাগত শুষে নিচ্ছে তীব্র গরম। তারপর তাপ বের করে যাচ্ছে ক্রমাগত। একে বলা হয় ‘রেডিয়েটেড হিট’। সে কারণে দেখা যাচ্ছে, গ্রামগঞ্জের তুলনায় শহরাঞ্চলের তাপমাত্রা অনেক বেশি। সন্নিহিত এলাকাগুলির তুলনায় বড় শহরগুলির অবস্থা অনেকটা গরমে ফুটতে থাকা দ্বীপের মতো। তাই নাম দেওয়া হয়েছে ‘হিট আইল্যান্ড’। আশপাশের এলাকার তুলনায় কলকাতার মতো বড় শহরে সন্ধ্যাবেলার তাপমাত্রার তুলনা করলে এই প্রবণতার আঁচ রীতিমতো টের পাওয়া যাচ্ছে। 

    এগুলি বিজ্ঞান আলোচনা। বাস্তবে রাস্তায় বেরিয়ে মানুষ এখন ঘামছে কম। শুষ্ক গরমের জ্বালা কিরকম তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। তার কারণ কী? কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন অতিরিক্ত অধিকর্তা ডঃ দীপঙ্কর সাহা বলেন, ‘সমস্যা হল, এখন শুধু বাইরে নয় ঘরে ঢুকলেও অসহ্য গরম লাগছে। আসলে বাড়িগুলি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে, স্বাভাবিক হাওয়া-বাতাস যাতায়াতের রাস্তা‌ থাকছে না। ফলে এসি বসানো আবশ্যক হয়ে পড়ছে। লাগামছাড়া নগরায়ণ কলকাতার মতো সমস্ত বড় শহরকে হিট আইল্যান্ডে পরিণত করেছে।’ আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাসও বলেন, ‘নগরায়ণের জন্য গরম বাড়ছে। হিট আইল্যান্ড তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এটি প্রমাণিত। তবে হিট ওয়েভের সময় শুকনো গরমের দাপট বেশি থাকে। অন্যসময় বেশি থাকে আর্দ্রতা। এর কোনও বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। হ্যাঁ গ্লোবাল ওয়ার্মিং-সহ নানা কারণে যেটা হয়েছে তা হল—এই ঠান্ডা, এই গরম, অর্থাৎ হঠাৎ হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের ব্যাপারটা বেড়ে গিয়েছে।’ 

    এই অসহ্য শুষ্ক গরমে সুস্থ থাকার উপায় কী? পিজি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ নীলাদ্রি সরকার জানান, প্রধান দু’টি উপায় হল, পর্যাপ্ত জলপান এবং দুপুরে বাড়ির বাইরে বেরনো এড়িয়ে চলা। দুপুরে নিতান্ত বেরতেই হলে শরীর ঢেকেঢুকে বেরতে হবে। অন্যথায় হতে পারে ‘হিট র‌্যাশ’।
  • Link to this news (বর্তমান)