• তৃণমূল নেতার দাদাগিরি ঘোচালেন প্রার্থী সায়ন্তিকা
    বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • বিশ্বজিৎ মাইতিm বরানগর : পার্টি অফিসে নিয়মিত হাজিরা দেওয়া হয়নি। তাই স্থানীয় নেতার ফতোয়ায় রাস্তায় টোটো চলাচল নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাবড় কাউন্সিলার ও নেতাদের ফোন করেও সুরাহা পাননি ময়দান কাঁপানো বরানগরের ফুটবলার রাজীব ঘোড়ুই। শেষপর্যন্ত তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া লাইভ দেখে এক নিমেষে সমস্যার সমাধান করলেন উপ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার থেকে রাস্তায় ফের টোটো চলতে শুরু করায় হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন রাজীববাবু। এই টোটোই যে  তাঁর সংসার চালানোর বড় ভরসা! 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বরানগরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বারুই পাড়ার বাসিন্দা রাজীব। একসময় তিনি মোহনবাগান দলের হয়ে খেলেছেন। অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের হয়ে চীনের সাংহাই গিয়েছিলেন। এছাড়া সন্তোষ ট্রফি সহ নানা টুর্নামেন্টে তাঁকে খেলতে দেখা গিয়েছে। ময়দানের পরিচিত এই খেলোয়াড় গত বছর ভুটানের একটি ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। তবে দেশের বড় ক্লাবে সুযোগ না মেলায়, এখন বিশেষ আয় নেই। বাবা, মা’কে দেখার পাশাপাশি দাদার সংসার খরচের বড় অংশ তাঁকেই দিতে হয়। হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা রাজীব সংসার চালানোর জন্য বছর তিনেক আগে ধার করে টোটো কিনেছিলেন। করোনার সময় মাংসের দোকান চালিয়ে টোটোর ইএমআই মিটিয়েছেন। এখনও বাড়িতে থাকলে টোটো ও বাইকে পানীয় জলের ড্রাম চাপিয়ে বিভিন্ন আবাসনে পৌঁছে দু’পয়সা রোজগার করেন রাজীব। 

    দৈনিক ভাড়ায় এখন সেই টোটো একজনকে চালাতে দিয়েছেন। বরানগর-ডানলপ রুটে ওই টোটো চললে তবে দিনের শেষে ১৫০-৩০০ টাকা মেলে। তবে শর্ত একটাই, নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে জোড়াফুলের পার্টি অফিসে। না গেলে, বন্ধ টোটো। সে শর্ত পূরণ না হওয়ায় গত ১৯ এপ্রিল ফের টোটো বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, এলাকার আইএনটিটিইউসি নেতার অনুগামী এক ছাত্র নেতা ফোন করে জানান, পার্টি অফিসে নিয়মিত না এলে টোটো রাস্তায় চলবে না।

    পরিবারের সদস্যদের থেকে বিষয়টি জানার পর রাজীব  বরানগরের তৃণমূলের একাধিক নেতা ও দুই কাউন্সিলারকে জানিয়েও কোনও সুফল পাননি। পরের দিন রাজস্থানের একটি ক্লাবে ট্রায়াল দিতে যাওয়া বাতিল করে তিনি সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে গিয়ে সমস্যার কথা সবিস্তারে জানান। বিষয়টি সায়ন্তিকার নজরেও যায়। সবপক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে ফের  টোটো চলার ব্যবস্থা করে দেন তিনি।

    রাজীব বলেন, সায়ন্তিকাদির উদ্যোগে ফের রাস্তায় টোটো চলছে। উনি ভোটের পর কথা বলবেন বলেছেন। আমার মতো বরানগরের খেলোয়াড়দের জন্য সামান্য কর্মসংস্থানের বিষয়টি উনি দেখলে আমরা উপকৃত হব। সায়ন্তিকা বলেন, কারা কী উদ্দেশ্যে কেন টোটো বন্ধ করেছিল, জানি না। বিষয়টি জানার পর আমি ওদের সবার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়েছি। ভোটের পর ফের রাজীবের সঙ্গে কথা বলব।
  • Link to this news (বর্তমান)