শহরে বেআইনি বহুতল সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করতে নতুন পোর্টাল বানাচ্ছে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ। এই পোর্টালের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ জানতে পারবেন, পুরসভায় প্ল্যান স্যাংশন করে কোন বিল্ডিং তৈরি হয়েছে। কোন বিল্ডিংয়ের প্ল্যান স্যাংশন হয়নি। পোর্টাল থেকে জেনে ক্রেতারা ফ্ল্যাট কিনলে তাঁদের পরে আর সমস্যায় পড়তে হবে না।আনঅথোরাইজড কনস্ট্রাকশন কেস এন্ট্রি সিস্টেমের মাধ্যমে এই নতুন পোর্টাল আপডেট করা হবে। পুরসভাকে কেউ চিঠি দিয়ে, টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে ফোন করে, গ্রিভ্যান্স সেলে, বিল্ডিং বিভাগে ফোন করে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ জানালে সেই তথ্য যাচাই করে নতুন পোর্টালে তুলবেন বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা।
এ ছাড়া বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা ওয়ার্ডে–ওয়ার্ডে ঘুরে যে বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করছেন, তারও নথি দেওয়া থাকবে পোর্টালে। ওয়ার্ড নম্বর, বরো নম্বর, প্রেমিসেস নম্বর, রাস্তার নাম-সহ নির্মাণ সংক্রান্ত ২৪টি তথ্য থাকবে পোর্টালে। এ-সব তথ্য দেখে ফ্ল্যাট কিনতে গেলে এক জন ক্রেতা সহজেই বুঝতে পারবেন তিনি যে ফ্ল্যাট কিনতে চাইছেন, তা পুরসভার বিল্ডিং আইন মেনে তৈরি হয়েছে কিনা।
বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গার্ডেনরিচের নির্মীয়মাণ বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার পর বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে ঘুরে বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করতে গিয়ে দেখেছেন, বহু জায়গাতেই ডেভলপাররা তিন তলা আবাসন নির্মাণের প্ল্যান পুরসভার কাছ থেকে স্যাংশন করিয়ে পরে বেআইনি ভাবে আরও দু’তলা বাড়িয়ে পাঁচ তলা আবাসন বানিয়েছেন।
বেআইনি অংশে ফ্ল্যাট কিনে বিপদে পড়ছেন ক্রেতারা। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই ডেভলপাররা ক্রেতাদের ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন তিন তলার স্যাংশন-প্ল্যান দেখিয়ে। নিশ্চিন্ত হয়ে বেআইনি অংশে ফ্ল্যাট কিনে থাকতে শুরু করে দেন অনেকে। সেখানে বেআইনি অংশের ফ্ল্যাট চিহ্নিত করতে গিয়ে পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা বাধার মুখেও পড়ছেন।
এই ধরনের বিপদ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতেই নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পোর্টালে আপলোড করার সিদ্ধান্ত পুরসভার। ক্রেতারা নির্দিষ্ট ভাবে তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘নতুন এই পোর্টাল তৈরির কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে সাধারণ মানুষকে আর বেআইনি অংশে ফ্ল্যাট বিক্রির সুযোগ পাবেন না ডেভলপাররা।’