এই সময়: আশা জাগিয়েছিল আকাশে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের উপস্থিতি। ওই মেঘের প্রভাবেই টানা তিন দিন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করে ফেলা কলকাতা সোমের পর মঙ্গলবারও (৩৯.১) ৪০ ডিগ্রির নীচেই রইল। টানা আট দিন ৪০ ডিগ্রির উপরে থাকার পর অবশেষে কিছুটা নামল সল্টলেকের (৩৯.৭) তাপমাত্রাও।শুধু কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা নয়, বাঁকুড়া, আসানসোল, পানাগড়, কলাইকুন্ডার মতো গরম চাটু হয়ে যাওয়া জায়গাগুলোর সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কয়েক ডিগ্রি কম। সামান্য কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টির আশায় চাতক পাখির মতো বসে থাকা দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের জন্য অবশ্য তেমন কোনও সুখবর শোনাতে পারলেন না আবহবিদরা। বরং মেঘ কাটলেই আজ বুধবার থেকে গরম আরও বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের।
আগামী তিন দিনে সব ক'টি জেলার তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে- এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শনিবার পর্যন্ত রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে ১৮টিতেই তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাও। শুক্রবার ২৬ এপ্রিল এই দুই জেলায় নির্বাচন।
পূর্বাভাসে স্পষ্ট, ভোটের আবহে বাসিন্দাদের সঙ্গী হতে চলেছে রোদের চোখরাঙানিও। আজ বুধবার ও আগামিকাল বৃহস্পতিবার রাজ্যের ৪ জেলায় তাপপ্রবাহের লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর। গত কয়েক দিন ধরেই তাপপ্রবাহ দক্ষিণবঙ্গের সীমা পার করে উত্তরের দিকে থাবা বাড়াতে শুরু করেছিল।
তবু মালদা এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো উত্তরবঙ্গের দক্ষিণপ্রান্তের তিনটি জেলায় সরাসরি লু বইবার পূর্বাভাস ছিল না। মঙ্গলবার দুপুরে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর বৃহস্পতি ও শুক্রবার মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের কমলা সতর্কতা জারি করেছে। উত্তর দিনাজপুরে জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। উত্তরেও তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসের পাশাপাশি আশঙ্কা করা হচ্ছে, পশ্চিমের জেলাগুলোয় ফের ৪৪ ডিগ্রির ঘরে পৌঁছতে পারে পারা।
অন্যদিকে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলতে পারে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, প্রধানত তিনটে কারণের জন্য এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুকনো বাতাস প্রবাহ, বাতাসে জলীয় বাষ্পের অনুপস্থিতি এবং মেঘশূন্য আকাশ। সেই পরিস্থিতি পুরোপুরি তৈরি।
মঙ্গলবার সন্ধেয় হাওয়া অফিসের রিপোর্ট জানাচ্ছে মালদায় (৪০.৮) ইতিমধ্যেই তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এ দিন রাজ্যের মধ্যে উষ্ণতম স্থান ছিল মেদিনীপুর (৪১.২)। এ ছাড়া বাঁকুড়া (৪০.৬), ডায়মন্ড হারবার, কলাইকুন্ডা ও সিউড়ি (৪১), পানাগড়ের (৪০.৮) তাপমাত্রাও কিছুটা কম ছিল। ৪৪ ডিগ্রির দরজায় পৌঁছে যাওয়া ব্যারাকপুরও (৪০.২) এ দিন অনেকটাই সহনীয় ছিল।