Himanta Biswa Sarma : মুসলিমদের উড়ো চুমু থেকে 'আই লাভ ইউ'! কেন মোদীর উলটো পথে হিমন্ত?
এই সময় | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
অসমের নগাঁও জেলার রুপাহি গ্রাম। এখানকার ৯৫ শতাংশ বাসিন্দাই মুসলিম। লোকসভা ভোট নিয়ে প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে তাদের। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার একটি নির্বাচনী ব়্যালিতে অংশ নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে এই গ্রামের কিশোর থেকে প্রবীণ, মহিলা থেকে পুরুষ, সকলকেই। মুখ্যমন্ত্রী চপার নামবেই শুরু হল হইচই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুসলিম ইস্যুতে করা মন্তব্য নিয়ে যেখানে গোটা দেশ তোলপাড় সেখানে মুসলিম ভোটারদের মধ্যে একজন BJP সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এতটা উচ্ছ্বাস যেন কিছুটা চোখে লাগার মতোই।নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের একটি পুরনো বার্তা তুলে ধরে বলেছেন, 'কংগ্রেস দেশের সম্পদে মুসলিমদের প্রথম অধিকার রয়েছে বলে মনে করে। ওরা দেশের সম্পদ, আপনার কষ্ট করে অর্জিত আয় বহিরাগতদের মধ্যে বিলিয়ে দেবে। যাদের অনেক বাচ্চা, তাদের মধ্যে বিলিয়ে দেবে।' হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে দেখতে আসা মুসলিম জনতা এসব মন্তব্যের ধার ধারেনি। নগাঁওয়ের সুরেশ বোরার সমর্থনে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে উপচে পড়ে মুসলিমদের ভিড়। হাতের কাছে হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে পেয়ে কেউ তাঁকে জড়িয়ে ধরছেন, কেউ পায়ে হাত দিচ্ছেন আবার কেউ দু'হাত ভরে আশীর্বাদ।
বাংলাভাষী মুসলিম ভোটারদের ভরসা জিততে এক্সপার্ট হিমন্ত। নিজস্ব ঢঙে জয় শ্রীরামের বদলে নরেন্দ্র মোদী জিন্দাবাদ বলে শুরু করেন তাঁর বক্তৃতা। মুসলিম ভোটারদের উদ্দেশে ফ্লাইং কিস ছুড়ে দিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আই লাভ ইউ'।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, অসমের এই মুসলিম ভোটারদের কাছে জাত-ধর্মের বিভাজন কিংবা উস্কানিমূলক মন্তব্যের তেমন কোনও প্রভাব পড়ে না। গত তিন বছরে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার পারফর্ম্যান্সই এখানে ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাপদণ্ড। অসমের মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক দলীয় নেতা বলেন, 'গত তিন বছরে এই গরিব মুসলিম পরিবারগুলি সরকারা নানা উন্নয়মূলক প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। গত সরকারের আমলে তারা এসব পেতেন না।'
একটা সময় এই হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকেই বলতে শোনা গিয়েছিল, 'অসমে মিঁঞাদের কোনও প্রয়োজন নেই।' এখন তাঁর মুখেই মুসলিমদের জন্য ভালোবাসার বার্তা। ফলে গোটা দেশ যখন নরেন্দ্র মোদীর মুসলিমদের নিয়ে করা মন্তব্য নিয়ে কাটাছেঁড়া করছে তখন অসমের এই প্রান্তে দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি। ভোটবাক্সে তা কী ভাবে প্রভাব ফেলবে, সেটাই এখন দেখার।