• Zero Shadow Day : কাঠফাটা রোদ্দুর থাকলেও উধাও হবে ছায়া! কিছুক্ষণের মধ্যেই এই শহরে ম্যাজিক
    এই সময় | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • 'আজগুবি নয়, আজগুবি নয়, সত্যিকারের কথা। ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্র হল ব্যথা!' এ যেন ঠিক সুকুমার রায়ের কবিতার বাস্তব সংস্করণ। আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তারপরই ছায়াহীন হবে বেঙ্গালুরু। মুহূর্তের ম্যাজিকে গায়েব হবে গাড়ি-বাড়ি, বাস-ট্রাম কিংবা রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মানুষ, সমস্ত কিছুর ছায়া।কাঠফাটা রোদ্দুর থাকলেও থাকবে না কোনও ছায়া। কোন জাদুবলে বেঙ্গালুরুতে ঘটবে এমনটা? জানা যাচ্ছে, বুধবার বেলা ১২টা ২৭ মিনিট থেকে ১২টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর মাটিতে কোনও ছায়া পড়বে না। সে শহরের বাসিন্দারা সাক্ষী থাকবে এই বিস্ময়কর ঘটনার। ভোপাল, কন্যাকুমারী, হায়দরাবাদ এবং মুম্বইয়ের বাসিন্দারাও এই ঘটনার সাক্ষী থাকবেন বুধবার। তবে সবথেকে ভাল ভাবে এটি টের পাবেন বেঙ্গালুরুবাসী।

    কেন ঘটবে এমন ঘটনা?ছায়াহীন মুহূর্তে কোনও দৈবিক ঘটনা নয়। এর পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। ছেলেবেলায় স্কুলের পাঠ্যবইয়ের পড়া মনে করলে নিজেরাই বের করা যাবে ছায়াহীনতার আসল কারণ। সবটাই সূর্যের অবস্থানের কারিকুরি।

    নির্দিষ্ট দিনে মাথার উপর সূর্য থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় কোনও জিনিসেরই ছায়া পড়ে না। ভৌগলিক অবস্থানের নিরিখে এক একটি দিন ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে দুপুরবেলা সূর্য একেবারে মাথার উপর থাকে। সে সময় সূর্যের অবস্থানের নিরিখে মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি বা বস্তুর ছায়া উল্লম্বভাবে নীচে পড়ে। ফলে সেটি আর দেখা যায় না। ঠিক সেই মুহূর্তটুকুতে কোনও বস্তু বা মানুষের ছায়া পড়লেও তা দেখা যায় না। এই ছায়া উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনাকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হল জিরো শ্যাডো ডে।

    আলৌকিক নয় লৌকিকঅনেকেই এটিকে অলৌকিক কাণ্ড হিসেবে তকমা দিয়ে ফেলেন। তবে মাথায় রাখতে হবে, পৃথিবী একটি অক্ষের উপর ভর করে সূর্যের চারদিকে ঘোরে। আরও একটি অক্ষের উপর নিজের চারপাশে ঘোরে। এই দুই অক্ষ পরস্পরের থেকে সাড়ে ২৩ ডিগ্রি হেলে রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় সূর্যের উত্তরায়ণ। তখন মকরক্রান্তি রেখা ধীরে ধীরে মাথার উপর আসে। আবার ২১ জুন থেকে শুরু হয় সূর্যের দক্ষিণায়ণ। তখন কর্কটক্রান্তি রেখা বরাবর সূর্য ধীরে ধীরে মাথার উপর আসে। এই দুই ঘটনার সময় পৃথিবীর এক একটি জায়গায় সূর্য দিনের কোনও নির্দিষ্ট সময়ে ঠিক মাথার উপর অবস্থান করে। ফলে জিরো শ্যাডো ডের তৈরি হয়। পৃথিবীতে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে বসবাসকারী মানুষ, বছরে দু’ বার জিরো শ্যাডো ডের সাক্ষী থাকতে পারেন।

    এদিন জিরো শ্যাডো ডে উপলক্ষে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে। সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। সাধারণ মানুষ সেখানে অংশ নিয়ে এই ছায়াহীন মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পারবেন। দেখতে পারবেন, কী ভাবে ছায়া ছোট হতে হতে একসময়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে।
  • Link to this news (এই সময়)