এই সময়: ব্রিটেনের ঋষি সুনক সরকার অন্যান্য দেশ থেকে ইউকে-তে আসা বেআইনি মাইগ্র্যান্ট বা অভিবাসীদের একাংশকে পূর্ব আফ্রিকার রোয়ান্ডায় সরানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। সুনক সরকারের ওই পরিকল্পনা মঙ্গলবার অনুমোদন পেয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউকে থেকে ওই বেআইনি মাইগ্র্যান্টদের নিয়ে রোয়ান্ডার উদ্দেশে বিমান উড়তে শুরু করবে জুলাই মাসে।সে ক্ষেত্রে ইউকে থেকে রোয়ান্ডায় যাঁদের পাঠানো হবে, তাঁদের মধ্যে থাকার কথা ভারতীয়দেরও। ব্রিটেনে ঢুকে পড়ে সে দেশে আশ্রয় চাইছেন, এমন ভারতীয়ের সংখ্যা গত বছর, ২০২৩-এ প্রথম বার ৫ হাজার পেরোয়- সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৫২৫৩-এ। এ ক্ষেত্রে ভারত ৪ নম্বরে। আফগানিস্তান (৯৩০০), ইরান (৭৩৯৭) ও পাকিস্তানের (৫২৭৩) পর। শুধু গত বছরই ১ হাজার ১৯২ জন ভারতীয় অভিবাসী ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে ইংলিশ চ্যানেলের বিপজ্জনক রুট ধরে ব্রিটেনে বেআইনি ভাবে ঢুকে পড়েন।
সুনক সরকারের এই 'রোয়ান্ডা ডিপোর্টেশন প্ল্যান'-এর প্রধান লক্ষ্যই নাকি হলো, ছোট ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল ধরে ইউকে-তে ঢোকা আটকানো। রোয়ান্ডা অ্যাসাইলাম প্ল্যান সেই সব বেআইনি মাইগ্র্যান্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, যাঁরা ২০২২-এর ১ জানুয়ারির পর ব্রিটেনে 'বেআইনি ভাবে ঢুকেছেন'। তাঁদের সবার দাবি-দাওয়া, আবেদন-নিবেদন একটি পঞ্চবার্ষিকী সমঝোতার আওতায় খতিয়ে দেখা হবে। আবেদনগুলোর বিচার করা হবে ২৫টি কোর্টরুমে।
মোট ১৫০ জন বিচারক আইনি সব দিক দেখে বিচার করে রায় দেবেন। গোটা প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত হয়, সে জন্য আলাদা ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে ২০০ জন কেসওয়ার্কারকে। অভিবাসীদের মধ্যে যাঁদের আবেদন গ্রাহ্য হবে, তাঁরা রোয়ান্ডায় রিফিউজি বা উদ্বাস্তু স্টেটাস পাবেন এবং সেখানে থেকে যেতে পারবেন। বাকিরা অন্য কোনও 'নিরাপদ তৃতীয় দেশে' আশ্রয়ের জন্য আবেদন জানাতে পারেন কিংবা অন্য কোনও কারণ দেখিয়ে রোয়ান্ডাতেই থিতু হতে চেয়ে আবেদন জানাতে পারেন।
তবে যাঁরা আশ্রয় চাইছেন, তাঁদের কারও কাছে ইউকে-তে ফেরার জন্য আবেদন করার সুযোগ থাকছে না এই ব্যবস্থায়। কত জন বেআইনি অভিবাসীকে ইউকে থেকে রোয়ান্ডার বিমানগুলোয় তুলে দেওয়া হবে, সেই তথ্য সুনক সরকার এখনও সামনে আনছে না। তবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনক এটা উল্লেখ করেছেন যে, গ্রীষ্মকাল এবং তার পর প্রত্যেক মাসে বেশ কয়েকটি বিমান বেআইনি অভিবাসীদের নিয়ে রোয়ান্ডার উদ্দেশে উড়বে।
গত বছর ছোট ছোট বোটে করে ১১৯২ জন ভারতীয় অতিমারী-পরবর্তী সময়ে রুজি রোজগারের সন্ধানে এবং আশ্রয় পেতে ইলিংশ চ্যানেল পেরিয়ে ব্রিটেনে ঢুকে পড়েন। কেবল গত বছরের হিসেব ধরলে এমন অভিবাসীদের সংখ্যার নিরিখে ব্রিটেনে ভারতীয়রা ৯ নম্বরে। গত বছর ওই ভাবে ব্রিটেনে ঢোকা বেআইনি ভারতীয় অভিবাসীদের প্রায় ৬০ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। এ ক্ষেত্রে অল্পবয়সি ভারতীয়দের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।