জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলিতে যে পরিমাণ টাকা পড়েছে তার হিসেব নিতে গিয়ে তো চক্ষু চড়কগাছ মসজিদ কর্তৃপক্ষের! জানা গিয়েছে, সেখানে জমা হয়েছে ২৩ বস্তা টাকা! এর সঙ্গেই পাওয়া গিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়নাও।
প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয় দানবাক্সগুলি। এবার তিন মাস ১৩ দিন পর দানবাক্সগুলি খোলা হয়েছে। কদিন আগে টাকা গোনার কাজ শুরু হয়। গণনার দিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিট থেকে শুরু হয় টাকা কাজ। গণনায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ২০০ জনের একটি দল। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এর আগে ৬ মে রমজানের কারণে চার মাস পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯টি বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সঙ্গে ছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হিরেও। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ১ দিন পরে দানবাক্স খোলা হয়েছিল। ২০টি বস্তায় তখন ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হিরে পাওয়া গিয়েছিল। আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিল এবারের দানসংগ্রহ। এবার পাওয়া গিয়েছে ৮ কোটি টাকা! মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গণনার দিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলি খুলে ২৩টি বস্তায় ভরে টাকাগুলি মসজিদের দোতলায় আনা হয় গণনার জন্য। এবং দ্রুত গতিতে টাকা গোনা হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ কোটি!টাকা গণনার কাজে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং ছজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সর্বক্ষণ তত্ত্বাবধানে ছিলেন। ছিলেন রূপালি ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম, মাদ্রাসার ১১২ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স অবস্থিত। প্রায় আড়াইশো বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে জানা যায়। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস যে, এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর ঠিক এই কারণেই দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন।