আরও বাড়বে গরম, ঝরবে ঘাম! এল নিনোর সৌজন্যে দেশের 'হাওয়া খারাপ'-এর আশঙ্কা
এই সময় | ২৪ এপ্রিল ২০২৪
চলতি বছরের মার্চ মাস থেকেই তপ্ত গরমে ঝলসে যাচ্ছে গোটা দেশ। একই অবস্থা ভারতের মতোই অন্যান্য গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলির। একটু বৃষ্টির আশায় হা পিত্যেশ করছেন মানুষ। তবে এর মাঝে আশার আলো তো দূর অস্ত উল্টে রীতিমতো ভয় ধরানো তথ্য দিচ্ছেন গবেষকরা। ভারত এবং অন্যান্য গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিকে রেকর্ড ব্রেকিং তাপ এবং আর্দ্রতার জন্য প্রস্তুত হতে বলছেন বিজ্ঞানীরা।গত ৪৫ বছরের তাপমত্রা এবং আর্দ্রতার চরম মাত্রার উপর ভিত্তি করে একটি গবেষণা হয় সম্প্রতি। আর তাতেই উঠে এসেছে এমন হাড়হিম করা তথ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, এল নিনো এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের মধ্যে মিথষ্ক্রিয়ার কারণে ভারত সহ অন্যান্য গ্রীষ্মপ্রধান দেশ গুলির তাপমাত্রা ছাপিয়ে যাবে সব রেকর্ড। সেইসঙ্গে আর্দ্রতাও বাড়বে প্রায় ৭০ শতাংশ।
এল নিনো কী?স্প্যানিশ ভাষায় এল নিনোর অর্থ হল ছোট ছেলে। এটি জলবায়ুর একটি প্যাটার্ন যা মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চ তাপমাত্রা দ্বারা চিহ্নিত। এই ঘটনাটি সাধারণত প্রতি দুই থেকে সাত বছরে ঘটে এবং স্থায়ী হয় নয় থেকে বারো মাস। এল নিনো প্রভাবিত করে সারা বিশ্বের আবহওয়াকে। এল নিনোর সময় তাপেবং আর্দ্রতা উপরের বায়ুমণ্ডলে পাম্প করা হয়, যার ফলে ভারতের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে একইসঙ্গে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা বৃদ্ধি পায়।সমীক্ষায় দেখা গেছে এই উপরের স্তরের তাপমাত্রা সাধারণত এল নিনো অবস্থা শিখরে থাকার পাঁচমাস পরে উষ্ণতম হয়।সুপার এল নিনোর সবচেয়ে সাম্প্রতিক শিখরটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ঘটেছিল। এই এল নিনোর প্রভাবের ফলে ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক শুকনো শীত এবং গ্রীষ্মকাল সহ্য করেছে মানুষ। গবেষকরা জানাচ্ছেন এর আসল এফেক্ট মাঝ গ্রীষ্মে প্রকাশ পাবে। উল্টে তাঁরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, ভবিষ্যতের রেকর্ড ব্রেকিং তাপ এবং অত্যাধিক আর্দ্রতা সহ্য করার জন্য প্রস্তুত হোক মানুষ।সমীক্ষায় দেখা গেছে যে উত্তর ভারতের মতো অঞ্চলগুলি, যেগুলি প্রায়শই আর্দ্র তাপের চাপ অনুভব করে সেই জায়গগুলি বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গবেষণার পর, এই গ্রীষ্মে উত্তর ভারতে রেকর্ড ব্রেকিং তাপ এবং আর্দ্রতার ৫০ শতাংশ বাড়র সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।অন্যদিকে আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলের মতো অন্যান্য অঞ্চলগুলিও উচ্চতর ঝুঁকির সম্মুখীন, যেখানে রেকর্ড আর্দ্র তাপের ৩৫ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যেহেতু ভারত এবং অন্যান্য গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলগুলি ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার মাত্রার দ্বারা সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলির জন্য প্রস্তুত এবং সক্রিয় পদক্ষেপ, আগাম সতর্কীকরণ ইত্যাদির ফলে জলবায়ু মোকাবিলায় দুর্বলতা হ্রাস এবং স্থিতিস্থাপকতা তৈরির জন্য অপরিহার্য হবে বলে মনে করা হচ্ছে।