কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এসএসসি সংক্রান্ত রায়ে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরেও প্রচুর শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এই বাতিল হওয়া প্যানেলে নাম রয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি কবিতা বর্মনের। ২০১৮-২৩ পর্যন্ত তৃণমূল পরিচালিত উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন তিনি। তার স্বামী প্রফুল্ল বর্মন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ এবং হেমতাবাদের ব্লক তৃণমূল সভাপতি পদে ছিলেন। কবিতা বর্মনের বিরুদ্ধে সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।সম্প্রতি, কবিতা বর্মন এবং তাঁর স্বামী প্রফুল্ল বর্মন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকের বালিজোল উচ্চবিদ্যালয়ে বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে দুর্নীতি যে হয়েছে তা অকপটে স্বীকার করেন কবিতা। তিনি বলেন,'হাইকোর্টের নির্দেশ তো এখন মানতেই হবে, দুর্নীতি হয়েছে। সাদা খাতা দিয়ে আমার চাকরি হয়েছিল এটা ঠিক না। সাদা খাতা জমা দিয়ে তো কারও চাকরি হয় না। গোটা প্যানেলটাই বাতিল হয়েছে, সেটা সবাইকে মেনে নিতে হবে।'
একইসঙ্গে এই দুর্নীতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছেন কবিতা। তিনি বলেন, 'এর জন্য আমরা দায়ী নই। রাজ্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্নীতির পথে নিয়ে যাচ্ছে। যা করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতি করেছে।' তাঁর ক্ষেত্রে কোনও 'মিডল ম্যান' ছিল না বলেও দাবি করেন কবিতা বর্মন।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৫৩ জনের। আর সই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) দায়ের করা হয়েছে রাজ্যের তরফে। সেই আবেদনে বলা হয়েছে, 'মহামান্য হাইকোর্ট রাজ্যকে এই ধরনের একটি পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে অবিলম্বে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল করেছে ও সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করেছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।'
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, হাইকোর্ট এই রায় ঘোষণার পরেই তার বিরোধিতা করেন রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। রায়কে কটাক্ষের পাশাপাশি নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।