• অভিষেকের রোড শোয়ে জলঙ্গি ভাসল জনপ্লাবনে
    বর্তমান | ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • তামিম ইসলাম, জলঙ্গি: কারও হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি, কেউ হাতে নিয়ে আছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফ্লেক্স। অনেকের হাতে ‘ইউ লাভ অভিষেক’ লেখা ফ্লেক্স। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে মুর্শিদাবাদ লোকসভার জলঙ্গির জোড়তলা বাজার তখন গমগম করছে। ঘড়ির কাঁটায় দুপুর সাড়ে ৩টে। সেখানে পৌঁছলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। বিশেষ গাড়ির ছাদে উঠে শুরু করলেন রোড শো। তাঁর সঙ্গে লোকসভার দলীয় প্রার্থী আবু তাহের খান থেকে স্থানীয় বিধায়ক। বাজছে, জনগর্জনের গান। গাড়ির সামনে ও পিছনে যতদূর চোখ যাচ্ছে, শুধুই কালো মাথার ভিড়। চড়া রোদ উপেক্ষা করে রাস্তার দু’ধারে, বাড়ির ছাদ থেকে দোকানের সামনে অগণিত মানুষ। কখনও তাঁদের দিকে গোলাপের পাপড়ি বর্ষণ করছেন অভিষেক, কখনও ছুড়লেন চকোলেট। প্রায় তিন কিলোমিটার রোড শোয়ে জলঙ্গির জনস্রোত স্বাগত জানাল তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডকে। রোড-শো শেষে পদ্মা নদীর ধারে মাইক্রোফোন হাতে তাঁর ঝাঁঝালো বক্তব্যে করতালির ঝড় উঠল।

    বুধবার নির্দিষ্ট সময়ের কিছুটা পরেই জলঙ্গি মহাবিদ্যালয়ের মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যাডে আসে অভিষেকের কপ্টার। সেখান থেকে গাড়িতে জোড়তলা বাজারে যান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার, মুর্শিদাবাদ লোকসভার প্রার্থী, জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক সহ তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব। অভিষেক গাড়ির ছাদে উঠতেই মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ান তিনি। এরপরে পদ্মার দিকে এগিয়ে যায় তাঁর রোড শো। তাঁকে দেখার জন্য কেউ কোলে বাচ্চা নিয়ে, কেউ আবার ছাতা হাতে নিয়ে রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। কারও হাতে আবার ‘আই লাভ এবি’ লেখা পোস্টার। তিন কিলোমিটার এগিয়ে গিয়ে যখন পদ্মার ধারে গিয়ে পৌঁছয় রোড শো তখন চারিদিকে যেন জনসুনামি। আশেপাশের বাড়ির ছাদগুলিতেও মহিলারা ভিড় করেছেন। 

    সেখানে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে প্রায় আধঘণ্টা বক্তব্য রাখেন অভিষেক। তিনি একযোগে বিজেপি, বাম ও কংগ্রেসকে নিশানা করেন। বাম-কংগ্রেস জোটকে ভোট দিলে যে আখেরে লাভ বিজেপির, তা এদিন স্পষ্ট করে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ২০১৯ এরা বিজেপির সুবিধা করেছিল। ২০২১-এ একই কাজ করার চেষ্টা করেছিল। আমি মুর্শিদাবাদের মানুষকে স্যালুট জানাই ২২টির মধ্যে ২০টি আসনে তাঁরা তৃণমূলকে জিতিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করেছেন। এবার ব্যবধান যেখানে ৬০ হাজার ছিল সেখানে ৭০ হাজার করতে হবে। যেখানে ৭০ হাজার ছিল সেখানে ৮০ হাজার করতে হবে। মানুষের ভোট নিয়ে তৃণমূল কখনও বেইমানি করে না। সিপিএম-কংগ্রেস বেইমানি করে। ২০১৯ সালে ভোট কেটে রায়গঞ্জ থেকে বিজেপিকে জিতিয়েছিল ওরা। সেই ভোট তৃণমূল পেলে রায়গঞ্জ লোকসভায় তৃণমূল জিতত। এখানকার মানুষকে বলব মুর্শিদাবাদকে দ্বিতীয় রায়গঞ্জ হতে দেবেন না। পাশাপাশি এদিন তাঁর বক্তব্যে বিজেপিকে তুলোধনা করেন অভিষেক।
  • Link to this news (বর্তমান)