• ২৬ হাজার চাকরিহারার সুবিচার চাই, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য-এসএসসি
    বর্তমান | ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি ও কলকাতা: প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বুধবার দু’টি আবেদন জমা পড়ল সুপ্রিম কোর্টে। একটি করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। অন্যটি দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের। এসএসসির ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেলই হাইকোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। ফলে উচ্চ আদালতের হিসেবে চাকরি চলে যেতে বসেছে এক লপ্তে প্রায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। তা রুখতেই, সুবিচার চেয়ে রাজ্য সরকারের এই স্পেশাল লিভ পিটিশন। সঠিক যোগ্যতায় পরীক্ষা দিয়ে যারা চাকরি পেয়েছেন, কিংবা যাদের নিয়োগের বিষয়ে কোনও অভিযোগ নেই, তাদের চাকরি অক্ষত রাখতেই এই পদক্ষেপ।

    ৮২৬ পাতার ওই আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের কাছে রাজ্য সরকারের আবেদন, কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালের প্যানেল সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা একসঙ্গে করে দেওয়ায় বৈধ নিয়োগও বাতিল হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ২৩ হাজার ১২৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীই যোগ্য। তাঁদের উপর এর প্রভাব পড়েছে। মাত্র ৪ হাজার ৩২৭ জনের ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাই এ ব্যাপারে যথাযথ নির্দেশ দিক সর্বোচ্চ আদালত। একইভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকেও ৮৩৪ পাতার স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। তাদের আর্জি, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৩৪৮টি মামলার মধ্যে থেকে ১৮০টির নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করেছে। এতে সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন হচ্ছে। বাতিল করে দেওয়া হয়েছে পুরো প্যানেল। তাই সুবিচার চেয়েই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন বলেই আর্জি রেখেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এখন দেখার কবে শুনানির সময় দেয় শীর্ষ আদালত। 

    রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এই ইস্যুতে সরাসরি দায়ী করেছেন গেরুয়া শিবিরকে। এদিন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের জনসভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমোর আহ্বান, ‘চাকরি খাওয়া বিজেপিকে একটাও ভোট দেবেন না।’ একই সঙ্গে হাইকোর্টকেও ‘বিজেপির মহাতীর্থ’ বলে নিশানা করেছেন তিনি। তাঁর সাফ কথা, বিজেপি যা বলছে, হাইকোর্ট তাই করছে। তাই হাইকোর্টের রায় তিনি মানেন না। সুপ্রিম কোর্টেই সুবিচারের প্রত্যাশা করছেন। এমনকী বিরোধী দলনেতাকে হাইকোর্টের আইনি রক্ষাকবচ দেওয়ার সমালোচনাতেও সরব করেছেন মমতা। সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ডাকাত, মাফিয়াদের জামিন হয়ে যায়। আর বিজেপির গদ্দারকে গ্রেপ্তার করা যায় না। ২৬ হাজার মানুষের চাকরি খেয়ে ড্রাম বাজাচ্ছে বিজেপি নেতা।’ নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, চাকরি দেওয়ার দায়িত্বে থাকে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি হস্তক্ষেপ করেন না। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকেও হাইকোর্টের এই রায়ের বিরোধিতা করা হয়েছে। যোগ্যদের পুনর্বহালের দাবিতে আগামী ২৯ এপ্রিল সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল করে মুখ্যসচিবকে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে তারা। 
  • Link to this news (বর্তমান)