ডলারের বিনিময়ে টাকা চাই! ফোরেক্স ব্যবসায়ীকে অপহরণ, উদ্ধার করল কলকাতা পুলিশ
প্রতিদিন | ২৫ এপ্রিল ২০২৪
অর্ণব আইচ: ডলারের বিনিময়ে টাকা আদায় করতে কলকাতা থেকে ব্যবসায়ীকে অপহরণ। ব্যবসায়ীর বাড়িতে ফোন করে দুলাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোনও করে অপহরণকারীরা। অভিযোগ পেয়ে, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় অভিযান চালিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, অপহৃত ওই ব্যবসায়ীর নাম শেখ মহম্মদ আহিয়া। তিনি দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণীর (Bansdroni) ব্রহ্মপুরের বাদামতলার বাসিন্দা। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থা রয়েছে ওই ব্যবসায়ীর। সেই সূত্র ধরে ডলার-সহ বিদেশের বিপুল পরিমাণ মুদ্রা বিনিময় করেন। শেয়ারের ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত তিনি। মঙ্গলবার, সুব্রত বালা ওরফে পার্থ ও অভিজিৎ বিশ্বাস দুই ব্যক্তি আহিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা দুজনেই মুদ্রা বিনিময়ের সঙ্গে যুক্ত। দুজনের বাড়িই উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার সিন্দ্রানি গ্রামে।
মঙ্গলবার যোগাযোগের পর তারা আহিয়াকে কাঁচরাপাড়ায় (Kanchrapara) ডেকে পাঠায়। ডলারের বদলে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে বলে তাঁকে। সমপরিমাণ ডলার আহিয়াকে অনলাইনে দেওয়া হয়। আহিয়া তাঁর এক কর্মীকে বলেন অভিযুক্তদের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে। কিন্তু অভিযুক্তরা পাল্টা অভিযোগ তোলে যে,দেড় লাখ টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়লেও বাকি দুলাখ টাকা জমা পড়েনি। এই দুলাখ টাকা নিয়েই ব্যবসায়ী আহিয়ার সঙ্গে বাকি দুজনের বচসা শুরু হয়। ব্যবসায়ী তাদের টাকা ফেরৎ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও অভিযুক্তরা তাঁর উপর ভরসা করতে পারেনি।
অভিযোগ, একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাঁকে প্রথমে মারধর করা হয়। এর পর একটি গাড়ি ডেকে জোর করে তুলে বাগদার সিন্দ্রানি গ্রামে নিজেদের ডেরায় নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। আহিয়াকে দিয়েই তাঁর বাড়িতে ফোন করিয়ে দুলাখ টাকা মুক্তিপণ হিসাবে দিতে বলে। না হলে আহিয়াকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও পরিজনদের হুমকি দেয় অভিযুক্তরা।
আহিয়ার পরিবারের লোকেরা বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগ জানান। একইসঙ্গে পরিবারের লোকেরা কথাও চালিয়ে যেতে থাকেন অপহরণকারীদের সঙ্গে। পুলিশ মোবাইলের সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করে। বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুণ্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা মঙ্গলবার সিন্দ্রানি গ্রামে হানা দেন। ব্যবসায়ী আহিয়াকে উদ্ধার করার পর সুব্রত ও অভিজিৎকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।