• ‘ভুলের’ পুনরাবৃত্তি নয়, আশা মমতার সভায়
    আনন্দবাজার | ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • বছর দশেক আগেও এক লোকসভা ভোটের আগে এলাকায় সভা করতে এসেছিলেন তিনি। সে বার তাঁর এক মন্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। তার পরের কয়েকটি ভোটে এই এলাকায় দলের ফলও ভাল হয়নি। এ বার লোকসভা ভোটের আগে আবার কুলটিতে সভা করতে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এখন আর কোনও ভুল চাইছেন না দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা। তাঁদের আশা, নেত্রীর বার্তা সম্বল করেই এ বার এলাকায় ঘুরে দাঁড়াবে দল।

    দলের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্‌হার প্রচারে ২৭ এপ্রিল কুলটিতে আসছেন মমতা। ২০১৪, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট এবং তার পরে ২০২২-এর উপনির্বাচন— আসানসোল সংসদে পর পর তিনটি ভোটে কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির কাছে তৃণমূল পরাস্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও কুলটি কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছে তাদের। জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী অজয় পোদ্দার। এই পরিস্থিতিতে, ২০২৪ সালের এই ভোটে কুলটিতে বিশেষ নজর রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রতি লোকসভায় দু’টি করে সভা করতে পারেন নেত্রী। আসানসোল কেন্দ্রে সভা করার তালিকায় থাকছে কুলটি।

    কুলটিকে সভা করার জায়গা হিসেবে বাছার কারণ কী? জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘বহু চেষ্টা করেও কুলটি থেকে জয় পাচ্ছে না দল। এমনকি, বিধানসভা আসনও হাতছাড়া হয়েছে। অতীতের ভোটপ্রাপ্তির পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে নেতৃত্বের ধারণা হয়েছে, কুলটির হিন্দিভাষী ভোটারদের কাছে টানতে ব্যর্থ দল। প্রতিটি ভোটেই দলের প্রতি হিন্দিভাষী বাসিন্দাদের সমর্থন কমেছে।’’ জেলা নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এমনিতে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের হিন্দিভাষী ভোটারদের বড় অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। কুলটিতে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। জেলা নেতৃত্ব মনে করছেন, এই এলাকায় বিজেপির সঙ্গে দলের ভোটের ব্যবধান কমাতে পারলে লোকসভা আসনটি ধরে রাখা যাবে। সে কারণেই নেত্রীর সভার আয়োজন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভা মানে জনপ্লাবন ও মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন। এ বার তৃণমূল প্রার্থী জিতবেন।’’

    বছর দশেক আগে কুলটি থানা মোড় মাঠে জনসভায় প্রার্থী দোলা সেনকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিন্দিভাষীদের সমর্থন চেয়ে তাঁদের এ রাজ্যের ‘অতিথি’ বলে উল্লেখ করে বসেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করে বিজেপি। তারা দাবি করে, পশ্চিমবঙ্গে কয়েক প্রজন্ম ধরে বাস করার পরেও হিন্দিভাষীদের তৃণমূল এখানকার মানুষ বলে মনে করে না, তা মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যেই স্পষ্ট। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল নেত্রীর ওই বিতর্কিত মন্তব্য জয়ের পথ মসৃণ করেছিল। দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে মুখ্যমন্ত্রী এমন কিছু মন্তব্য করছেন যেগুলি বিজেপি প্রচারের হাতিয়ার করেছে। অতীতের মতো এ বারও কুলটির সভায় আমাদের নজর থাকবে।’’

    তৃণমূল নেতৃত্বের আশা, অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি নিশ্চয় হবে না।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)