এই সময়, দিঘা: নকল নথি দেখিয়ে দিঘার হোটেলে থাকা বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণে অভিযুক্ত দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের পরে নড়েচড়ে বসল পুলিশ। ‘অতিথি’ পোর্টাল যাতে সব হোটেলে চালু হয় তার জন্য হোটেলগুলিকে ফের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যটকের দেওয়া আধার সঠিক কিনা তা দেখার জন্য, হোটেলে গিয়ে ম্যানেজারদের শেখানো শুরু করেছে পুলিশ।গত ১০ এপ্রিল ভুয়ো আধারকার্ড দেখিয়ে হোটেলে উঠেছিল বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণে দুই অভিযুক্ত। অমল কুলকার্নি ও ইউশা সাহানওয়াজ নাম খাতায় লিখে নিউ দিঘার এন ২ সেক্টরের ওই হোটেলের তিন তলায় থাকতে শুরু করে তারা। তাদের গ্রেপ্তার পরে তদন্তে হোটেলের গাফিলতিও ধরা পড়ে।
ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) আবুনুর হোসেন বলেন, ‘পরিচয়পত্র যাচাই ও অতিথি পোর্টাল চালুর বিষয়ে হোটেলে গিয়ে বোঝানো হচ্ছে। কী ভাবে নকল আধার কার্ড ধরা সম্ভব তা শেখানো হচ্ছে।’ প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হোটেলে হোটেলে গিয়ে কীভাবে পরিচয়পত্র যাচাই করা হবে তা বোঝাচ্ছেন দিঘা থানা ও দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার পুলিশকর্মীরা।
দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘সবসময় আধার, ভোটারের মতো পরিচয়পত্র দেখেই পর্যটকদের হোটেলে থাকতে দেওয়া হয়। বিদেশি পর্যটক এলে থানায় জানানো হয়। পাসপোর্ট, ভিসা দেখে হোটেলে থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিচয়পত্র যাচাইয়ের ব্যবস্থা কোনও হোটেলে নেই। পুলিশ যেভাবে পরিচয়পত্র যাচাইয়ের কথা বলেছে সেই ভাবেই করা হবে।’
দিঘা সহ সৈকতের পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে পরিচয়পত্র দেখিয়ে পর্যটকদের হোটেলে থাকার নিয়ম অনেক দিনের। অভিযোগ, নিয়মের ফাঁক গলে এক শ্রেণির পর্যটক ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়ে হোটেলে উঠতেন। জঙ্গি গ্রেপ্তারের পরে পরিচয়পত্র যাচাইয়ে আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে চাইছে পুলিশ।
দিঘা-সহ উপকূলের তিন পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য দিঘা ও রামনগর থানাকে ভেঙে দিঘা মোহনা কোস্টাল থানা ও মন্দারমণি কোস্টাল থানা নামে দু’টি নতুন থানা তৈরি করা হয়েছে। দুটি থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন ডিএসপিকে। ওল্ড দিঘা ও নিউ দিঘা মিলে প্রায় সাড়ে আটশো ছোট-বড় হোটেল রয়েছে।
বিশেষ বিশেষ ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি পর্যটক দিঘায় বেড়াতে আসেন। দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের হিসেব মতো, প্রতি বছর ৫০ লক্ষের বেশি পর্যটক সৈকতে ছুটি কাটাতে আসেন। ভিনরাজ্যের পর্যটকদের পাশাপাশি কিছু বিদেশি পর্যটকও দিঘা বেড়াতে আসেন। সেই কারণে রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যে একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পুলিশ ও পর্ষদ কর্তৃপক্ষ।