দ্বিতীয় দফার লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় পদক্ষেপ কমিশনের। ভাষণ দেওয়ার সময় নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে। তাঁদের দু'জনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জবাব তলব করল নির্বাচন কমিশন। বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়ই একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনী ভাষণে মোদী ও রাহুলের বিরুদ্ধে ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় বা ভাষার ভিত্তিতে ঘৃণা ও বিভাজনের অভিযোগ তুলেছিল।২৯ এপ্রিল সকাল ১১টার মধ্যে মোদী ও রাহুল গান্ধী উভয়ের থেকেই জবাব তলব করেছে কমিশন। উল্লেখ্য,কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপি নির্বাচন কমিশনে নালিশ করে। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, দেশের দারিদ্র বৃদ্ধি নিয়ে রাহুল গান্ধী দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কমিশনের কাছে কড়া পদক্ষেপের দাবি নিয়ে হাজির হন বিজেপির নেতারা। গেরুয়া শিবিরের আরও দাবি, ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন রাহুল। ভাষা ও অঞ্চলের ভিত্তিতে তিনি দেশের উত্তর-দক্ষিণ বিভাজন করছেন তিনি। অন্যদিকে, রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর করা ওই মন্তব্যকে এক বাক্যে ঘৃণাভাষণ আখ্যা দিয়ে তার নিন্দায় সরব হয়েছেন বিরোধী সব নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ হয় বাম-কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, রবিবার রাজস্থানের একটি সভায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'কংগ্রেস যে সময় ক্ষমতায় ছিল তখন বলেছিল দেশের সম্পদের উপর মুসলিমদের অগ্রাধিকার। অর্থাৎ কংগ্রেসের উদ্দেশ্য দেশের সম্পদ তাদের মধ্য়ে বন্টন করা যাদের বেশি সংখ্য়ক সন্তান রয়েছে। কংগ্রেস আসলে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে দেশের সম্পদ তুলে দিতে চায়। কংগ্রেসের ইস্তেহারেই বলা হয়েছে, মা-বোনদের সোনার গয়নার হিসেব করে তা সকলের মধ্য়ে বিলিয়ে দেওয়া হবে। মনমোহন সিংয়ের সরকার একসময় বলেই দিয়েছিল, দেশের সম্পদের উপর মুসলিমদেরই অধিকার রয়েছে সবার আগে। মা-বোনদের মঙ্গলসূত্রের দিকে নজর ওদের।' রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর করা ওই মন্তব্যকে ঘৃণ্য বলে আখ্যা দিয়ে বিরোধী নেতারা নিন্দায় সরব হন। মোদীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছিল বাম-কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দলগুলি।
oASg175Ui1
অন্যদিকে, দেশের দারিদ্র বৃদ্ধি নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অসত্য মন্তব্য করেছেন এই দাবিতে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানায় বিজেপি। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে বিজেপির প্রতিনিধির দল নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল। অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন জাতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ ও দলের মুখপাত্র অনিল বালুনি। কমিশনে অভিযোগ জানানোর পর সাংবাদিক বৈঠক করে তরুণ চুঘ ও অনিল বালুনি জানান, 'কোনও প্রমাণ ছাড়াই অসত্য প্রচার করছেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস নেতা বলেছেন, আরও ২০ কোটি মানুশ দরিদ্র হয়েছে দেশে। অথচ এই দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণই নেই তাঁর কাছে। বিজেপির প্রতিনিধি দল সাংবাদিকদের সামনে নীতি আয়োগের রিপোর্টও তুলে ধরে। একই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য ছিল, ভাষা এবং অঞ্চলের ভিত্তিতে উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতি করছেন রাহুল গান্ধী। বিজেপি সব ভাষাকে সম্মান করে। তামিল ভাষার জন্য তারা গর্বিত। তাদের ইস্তেহারেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তামিল ভাষার প্রচারে। কিন্তু রাহুল গান্ধী ঘৃণ্য রাজনীতি করছেন। বিজেপি নেতারা দাবি করেন রাহুলের জন্য দেশের আভ্যন্তরীণ শান্তিও বিঘ্নিত হতে পারে।