মাত্র ছয় মাস আগে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু এইভাবে যে অঘটন ঘটে যাবে তা ভাবতে পারেনি কেউই। পথ দুর্ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন উত্তরপ্রদেশের এক যুবক। পুলিশ যুবকের দেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে।উত্তরপ্রদেশের হরদোই জেলার বাসিন্দা ৩৬ বছর বয়সী যোগেশ কুমার পেশায় একজন শিক্ষক। মাস ছয়েক আগে মণিকর্ণিকা নামে এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সুরসা থানা এলাকার লখনউ-হরদোই হাইওয়েতে একটি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় মণিকর্ণিকার। স্ত্রীর মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না যোগেশ। বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহ্ত্যা করেন যোগেশ।
সুরসা থানা এসএইচও ইন্দ্রেশ কুমার যাদব জানান, সোমবার নিজের স্কুটিতে চেপে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন মণিকর্ণিকা। ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই নার্স হিসেবে কাজ করতেন তিনি। লখলউ-হরদোই হাইওয়েতে একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মরে মণিকর্ণিকার স্কুটিতে। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মণিকর্ণিকার মোবাইল ঘেঁটে তাঁর পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। যোগাযোগ করা হয় তাঁর স্বামীর সঙ্গে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান যোগেশ। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাড়ি ফিরেই নিজের ঘরে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। বার বার ডাকাডাকি করার পরও কোনও সাড়া দিচ্ছিলেন না যোগেশ।
ভাবগতিক বুঝতে না পেরে এরপর পুলিশকে খবর দেয় যোগেশের পরিবার। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। বন্ধ ঘর থেকে যোগশের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘর থেকে একটি চিরকূট পায় পুলিশ। সেই চিরকূটে লেখা ছিল, ‘আমরা একসঙ্গে বাঁচব, এক সঙ্গে মরব।’
এরপর যোগেশের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। বাড়ি থেকে পাওয়া চিরকূটের ভিত্তিতে যোগেশের মৃত্যু আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চিড়িয়াখানায় ঘুরত গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা মৃত্যু হয় স্বামীর। সেই শোক সইতে না পেরে বহুতল থেকেলাফ দিয়ে আত্মহত্য করেন স্ত্রী। নিজেরই সাত তলা ফ্ল্যাট থেকে ঝাঁপ দেন স্ত্রী। মর্মান্তিক এই ঘটনাটিও ছিল উত্তরপ্রদেশের।