রেলের ঝকঝকে চাকরি ছেড়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নপূরণ, চাকরিহারা সেই শুভঙ্করও
এই সময় | ২৫ এপ্রিল ২০২৪
একটি সমাজ গঠনের অন্যতম কারিগর একজন শিক্ষক। তাঁর হাত ধরেই হাজার হাজার, লাখ লাখ আগামী প্রজন্ম তৈরি হয়। তাই অনেকেই বহু থিতু চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা করার জন্য এগিয়ে আসেন। কেউ রেলে, কেউ প্রাথমিক আবার কেউ খাদ্য সরবরাহ দফতরে চাকরি ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন হাই স্কুলের শিক্ষক পদে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালদার ভিন্ন পেশা থেকে হাইস্কুলের শিক্ষক পদে যোগ দেওয়া ‘চাকরিহারাদের’ একাংশ।তাঁদের মধ্যে কেউ ভাবতেই পারেননি একদিন এই ভাবে চাকরি হারাতে হবে। এখন হঠাৎ করে দিশেহারা তাঁরা। সমাজের একাংশ দেখছে সন্দেহের চোখে। কেউ কেউ কটাক্ষ ছুড়ছেন, কেউ বা সমবেদনা। আর এই সবকিছু ছাপিয়ে সংসার নিয়ে চিন্তা ভাবাচ্ছে এই শিক্ষকদের।
এদিকে কিছু জনের চাকরির বয়সের ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে তাঁদের পক্ষে আর নতুন কোনও চাকরিতে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এখন কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলার চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের প্যানেলের চাকরিপ্রার্থীরা ২০১৯ সালে জেলার বিভিন্ন হাই স্কুলে শিক্ষক, শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন। সেই সংখ্যা প্রায় এক হাজার। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জেলায় চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষিকাদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, দাবি শিক্ষা দফতরের।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুরো প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে ‘যোগ্য’ প্রার্থীদেরও, এমনটাই দাবি। মালদা টাউন হলে জমায়েত হন তাঁদের একাংশ। এই 'চাকরিহারা'-দের দাবি, CBI অযোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছিল। তার পরেও প্যানেলের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কেন বাদ দেওয়া হল, প্রশ্ন তুলেন তাঁরা। আগামীতে তাই মালদার 'যোগ্য' শিক্ষক- শিক্ষিকারা সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
এই প্রসঙ্গে চাকরিহারা শিউলি পাটিল বলেন, ‘আমি ২০১৭ সালে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতে শুরু করি। এরপর প্রথম এসএলএসটি দিয়ে আমার সিলেকশন হয়। এখন তো এই অবস্থা। অযোগ্যদের নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিত। আমাদের এভাবে পথে বসিয়ে দেওয়ায় অত্যন্ত আশাহত।’
'আমাদের দোষটা কোথায়, চাকরি চলে গেল' প্রশ্ন চাকরিহারা শিক্ষকের
এদিকে মালদার ডিআরএম অফিসে চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা করতে এসেছিলেন শুভঙ্কর চৌধুরী। তিনি বলেন, 'রেলে চাকরি করতাম। দুই বছর চাকরি করি। তারপর স্কুলে পড়ানোর সুযোগ পাই। শিক্ষকতা অনেক সম্মানের। তাই পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিই। এখন আমরা দিশেহারা।'