• ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি বাড়ে এই কারণেই! বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো এড়িয়ে চলুন এখন থেকেই
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • ম্যালেরিয়া, একটি রোগ যা মানব জীবনকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জর্জরিত করেছে, বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, এই হুমকির বেশিরভাগ বোঝাই এখন ভারতের কাঁধে। সমন্বিত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, কার্যকর প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা করেও সংক্রমণ স্থায়ী রয়েছে এখনও। আসলে, ম্যালেরিয়া মোকাবেলা করার জন্য, আমাদের উন্নত জীবনে আজও কিছু বাধা বর্তমান। অবশ্যই এই বাধাগুলিকে অতিক্রম করেই একমাত্র ম্যালেরিয়াকে হার মানানো সম্ভব।

    এইচটি লাইফস্টাইলের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে, এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ইকো বায়োট্র্যাপসের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা, ডাঃ সুশান্ত কুমার ঘোষ শেয়ার করেছেন, ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি হল এই রোগটিকে বোঝার অভাব। বেশিরভাগ ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকায় প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেই। অনেকেই ভাবেন যে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ বা চিকিৎসা করা যায় না, যা মানুষের সক্রিয় পদক্ষেপগুলিকে বাধা দেয়। অনেকেই আবার পুরনো নিয়মে প্রতিকারের পথে হাঁটেন। যা সমস্যাটিকে আরও জটিল করে তোলে, প্রায়শই সঠিক চিকিৎসা এড়িয়ে যান, বিপদও বাড়ে।

    ক্লিনিকাল এপিডেমিওলজি এবং গ্লোবাল হেলথ জার্নালে প্রকাশিত ২০২৪ সালের সমীক্ষা অনুসারে, দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে বিশ্বব্যাপী ম্যালেরিয়ার ৭৯ শতাংশ প্রবণতা ভারতেই বর্তমান এবং নির্মূল করার প্রচেষ্টায় অনন্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। ডাঃ সুশান্ত কুমার ঘোষ প্রকাশ করেছেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি, পরিবেশগত পরিবর্তন এবং আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের মতো কারণগুলি ম্যালেরিয়া সংক্রমণ বাড়ায়। দ্রুত নগরায়ন, বন উজাড় এবং অপরিকল্পিত নির্মাণ ইকোলজিকে ব্যাহত করে, এই রোগের সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

    তিনি উল্লেখ করেছেন, ম্যালেরিয়ার হাত থেকে বাঁচতে হলে ম্যালেরিয়া অ্যাকশন প্ল্যান সাজাতে হবে। কোথাও জল দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না। ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ পরিষেবাগুলিকে আরও সচেষ্ট হতে হবে৷ যাইহোক, ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূল করার লক্ষ্য রয়েছে। নির্মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৩-২৭ সালের আউটরিচ এলাকায় নজরদারি এবং পদক্ষেপ জোরদার করার উপর জোর দিয়েছে। ডাঃ সুশান্ত কুমার ঘোষ আরও জোর দিয়ে বলেছিলেন, প্রচারের মাধ্যমে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে ম্যালেরিয়ার লক্ষণ, প্রতিরোধের পদ্ধতি এবং সময়মতো চিকিৎসায় খোঁজার গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করা হয়। এই প্রচারে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার মাধ্যমে, আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া মহামারী শেষ করার জন্য কাজ করতে পারি।

    মশার কীটনাশক প্রতিরোধ ক্ষমতা ভারতে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ। ডাঃ সুশান্ত কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, অ্যানোফিলিস কুলিসিফেসিস, অন্যতম ম্যালেরিয়া মশা, এই হুমকির উদাহরণ দেয়। এই মশার প্রজাতিটি নিজের মধ্যে কীটনাশক ডাইক্লোরো-ডিফেনাইল ট্রাইক্লোরোইথেন (ডিডিটি) এর সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে, যা ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরও জটিল করে তুলেছে। এছাড়াও অন্যান্য ম্যালেরিয়া মশা যেমন অ্যানোফিলিস ফ্লুভিয়াটিলিস, অ্যানোফিলিস সানডাইকাস এবং অ্যানোফিলিস স্টিফেনসিও সাধারণভাবে ব্যবহৃত কীটনাশকগুলির প্রতিরোধ করতে পারে। এই ফলাফলগুলি দেখায় যে প্রচলিত কীটনাশকগুলির বাইরে মশা নিয়ন্ত্রণে আরও উদ্ভাবনী পদ্ধতির প্রয়োজন, যা কার্যকরভাবে প্রতিরোধী মশাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)