বড়দের সাথে একমঞ্চে বসলেন না, ভিড়ের হাত থেকে বাবাকে আগলে ‘লক্ষ্মীছেলে’ অভিষেক
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ এপ্রিল ২০২৪
বুধবার অমিতাভ বচ্চনকে লতা দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কারে ভূষিত করা হল। বর্ষীয়ান গায়িকা তথা লতা মঙ্গেকশকরের বোন ঊষা এই সম্মান তুলে দেন মেগাস্টারের হাতে। সেই অনুষ্ঠানে বাবার সঙ্গে হাজির ছিলেন অভিষেক বচ্চন। বচ্চন-পুত্রর ব্যবহার এদিন মুগ্ধ করল নেটিজেনদের। বলিউডে প্রায় ২৪ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন অভিষেক। অমিতাভ বচ্চন-পুত্রের বাইরে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছেন, তবুও ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র তারকাদের সম্মান দেওয়ার ক্ষেত্রে জুনিয়র বি-র জুড়ি মেলা ভার! লতা দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কারের আসর থেকে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিয়ো, যেখানে দেখা গেল মঞ্চে ফুলের তোড়া দিয়ে সম্মান জানানো হয় অভিষেককে। সেটি নিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে যাচ্ছিলেন অভিষেক, তখনই এক প্রবীণ সদস্য নিজের আসন ছেড়ে অভিষেক সেখানে বসার অনুরোধ জানান। কিন্তু অমিতাভ, ঊষা মঙ্গেশকর, এআর রহমান, পদ্মিনী কোলহাপুরী-সহ সিনিয়র শিল্পীদের সম্মান জানিয়ে অভিষেক মঞ্চ ছাড়েন। অন্য়ের থেকে লাইমলাইট কেড়ে নিতে চাননি তিনি।
অভিষেকের এই আচরণে ধন্য ধন্য করছেন নেটিজেনরা। একজন লেখেন, ‘অমিতাভ-জয়া উচিত শিক্ষা দিয়ে বড় করেছেন অভিষেককে’। অপর একজন লেখেন, ‘টাকা আর খ্যাতি থাকলেই সব হয় না, প্রকৃত শিক্ষা দরকার পড়ে। আর অভিষেকের কাছে তিনটেই আছে’।
নেটপাড়ায় ছড়িয়ে পড়া অপর এক ভিডিয়ো দেখা গিয়েছে, অনুষ্ঠান শেষে ভিড়ের কীভাবে হাত থেকে অমিতাভকে আগলে রাখছেন অভিষেক। বাবা-ছেলের এই বন্ডিং মন জিতে নিয়েছে সবার। এদিন অমিতাভ পুরস্কার হাতে জানান, প্রয়াত সুর সম্রাজ্ঞীর স্মৃতিতে এই পুরস্কার পেয়ে তিনি ভাগ্যবান।
২০২২ সালে মাল্টি অর্গ্যান ফেলিউরের কারণে মৃত্যু হয় লতা মঙ্গেশকরের। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় লত। মেলোডি কুইনের স্মরণে তাঁর পরিবার এবং ট্রাস্টের তরফে এই পুরস্কার শুরু করা হয়। এটি ছিল তৃতীয়বর্ষ। ২৪ এপ্রিল লতা মঙ্গেশকরের দীননাথ মঙ্গেশকরের স্মরণ দিবসে অমিতাভ বচ্চনকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হল।
তিনি গ্রহণ করে তিনি বলেন, ‘আজ এই পুরস্কার পেয়ে আমি ভাগ্যবান। আমি কখনই নিজেকে এই পুরস্কারের যোগ্য মনে করিনি, কিন্তু হৃদয়নাথজী অনেক চেষ্টা করেছিলেন যাতে আমি এখানে আসতে পারি। গত বছর তিনি আমাকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। হৃদয়নাথজি, আমি শেষবারের মতো আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আমি তখন আপনাকে বলেছিলাম যে আমি অসুস্থ। আমি সুস্থ ছিলাম কিন্তু এখানে আসতে চাইনি। এই বছর আমার কোনও অজুহাত ছিল না, তাই আমাকে এখানে আসতে হল’।
অমিতাভের বাবা হরিবংশ রায় বচ্চন, লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠস্বরের ভক্ত ছিলেন। লতার কণ্ঠ তাঁর চোখে ছিল ‘মধুভরা ঝর্ণা’। অমিতাভ এদিন বলেন, 'তার কণ্ঠের মাধুর্য ছিল মধু এবং মধুর প্রবাহ যেমন কখনও ভাঙে না, তেমনি তার 'স্বর' কখনও ভাঙে না। যখনই কেউ সঠিক তারে আঘাত করে, আমাদের আত্মা 'পরমাত্মা'র সাথে মিলিত হয়। আর লতা মঙ্গেশকরজির 'স্বর' আমাদের সঙ্গে ঈশ্বরের যোগ দেয়।'
লতা দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার নামে পরিচিত এই পুরস্কারটি প্রতি বছর এমন একজন ব্যক্তিকে দেওয়া হয় যিনি দেশ, জনগণ এবং সমাজের জন্য যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আশা ভোঁসলে এই সম্মান পেয়েছেন। এদিন অমিতাভের পাশাপাশি ভারতীয় সংগীতে অবদানের জন্য মাস্টার দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার গ্রহণ করেন এ আর রহমান।