পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় খুন, এখনও বিচারের আশায় সেই মনসুরের পরিবার
এই সময় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় দুস্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল সিপিআইএম কর্মী মনসুর আলমের। ঘটনায় অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মনসুরের পরিবারের কাছে সেই ক্ষত আজও দগদগে। এখনও তার বিচার হয়নি। এই লোকসভা নির্বাচনেও মনসুরের পরিবার বাম সমর্থিক কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। শুক্রবার ভোটের আগে স্বজনহারা সেই পরিবারের একটাই দাবি, অপরাধীদের সাজা হোক।প্রসঙ্গত, গতবছর ১৫ জুন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় চোপড়া ব্লকের কাঠালবাড়ি গ্রামে দুস্কৃতীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মনসুর আলম নামে এক সিপিএম কর্মী। ২২ জুন শিলিগুড়িতে মৃত্যু হয় মনসুরের। ঘটনার পর মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, শতরূপ ঘোষ সহ একাধিক বাম নেতানেত্রী গিয়েছিলেন মনসুরের বাড়িতে, আশ্বাসও দেন পাশে থাকার। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের চোখ রাঙানি আজও তাঁদের উপরে রয়েছে। তবে তারপরেও মনসুরের পরিবার নিজেদের লক্ষ্যে স্থির।
চেপড়া অঞ্চলটি জেলাগতভাবে উত্তর দিনাজপুরের আওতায় হলে লোকসভাগত ভাবে এই বিধানসভা কেন্দ্রটি দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে অবস্থান করে। ওই কেন্দ্র থেকে লড়ছেন বাম সমর্থিক কংগ্রেস জোট প্রার্থী মুণীশ তামাং। আর তাঁর সমর্থনে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন লাগানো থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি প্রচার করছেন মনসুরের বাবা কাকারা।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দাসপাড়া অঞ্চলের গেন্ডাগছ গোয়াবাড়ি এলাকায় বাড়ি মনসুরের। ওই এলাকায় এই লোকসভা নির্বাচনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী ভাল ফল করবেন বলেই আশাবাদী তাঁরা। মনসুরের কাকা জাকির হোসেন বলেন, 'মনসুরকে যখন মারছিল তখন সেখানে আমিও ছিলাম। অনেক হাতে পায়ে ধরেছিলাম তবুও ওরা শোনেনি।' তিনি আরও বলেন, 'ঘটনার পর থেকেই তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের গুন্ডাবাহিনী একাধিকবার হুমকি দিয়েছে। এমনকী তাঁদের ভয়ে রাজ্য পুলিশ আমাদের বাড়িতে এনকোয়ারিতেও আসেনি। পুলিশও তাঁদের ভয় পায়।'
জাকির আরও বলেন, 'পুলিশকে অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু পুলিশও নিরুপায়। মাঝখানে শুনলাম মনসুরের খুনের অভিযুক্ত ফারুক অস্ত্র বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল, কিন্তু দশ দিনের মধ্যে ছাড়াও পেয়ে গেল। অপর এক অভিযুক্ত লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের তাজিমুল ওরফে জেসিবি-কেও পুলিশ ধরেছিল, পরবর্তীকালে সেও ছাড়া পেল। ওদের কাছে দুটি AK47-ও ছিল।' জাকির আরও বলেন, 'বাম-কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে এখনও হামিদুলের লোকজন হুমকি দিচ্ছে।' লোকসভা নির্বাচনে যেই জিতুক না কেন, তাঁর কাছে ভাইপো হত্যার যাতে বিচার হয় সেই দাবি রাখবেন বলে জানান জাকির।
জাকির হোসেনের দাবি, তাঁর ভাইপো মনসুর আলমকে যারা হত্যা করেছে তাদের কঠোরতম শাস্তি হোক। তবে হুমকির মাঝেও তাঁরা এখনও বিচারের আশায় দিন গুনছেন। কবে তাঁরা বিচার পাবেন তা অবশ্য সময়ই বলতে পারবে।