এই সময়, শিলিগুড়ি: দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে মোট বুথের সংখ্যা ১৯৯৯। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই সমস্ত বুথেই পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু পাহাড়ের ৯১৭টি বুথে এজেন্ট দিতে পারাটা এ বারের ভোটে মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপি এবং কংগ্রেসের কাছে। ভোটকর্মীরা ভোটারদের পরিচয় যাচাই করে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের কাজ ভোটারদের শনাক্ত করা।কিন্তু বুথে যদি নিজেদের এজেন্টই না-থাকে তাহলে ভোটার শনাক্ত করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে বিজেপির কাছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চোপড়া ব্লকেই বিজেপি সবচেয়ে বেশি কোণঠাসা। কার্শিয়াংয়েও বুথে এজেন্ট দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাই এ বার নির্দল প্রার্থী হয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার দিকে।
বিজেপি তড়িঘড়ি বিনয় তামাংকে দলে নিয়ে এই ঘাটতি মেটালেও শেষরক্ষা হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বুথে এজেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে একই সমস্যা কংগ্রেস-বাম জোটেরও। চোপড়ায় কংগ্রেস বুথে এজেন্ট দিতে পারলেও পাহাড়ের সর্বত্র এজেন্ট দিতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
২০০৪ সালের পরে কংগ্রেস পাহাড়ে কখনও সেভাবে নির্বাচন লড়েনি। অধিকাংশ বুথেই তাঁদের সংগঠন বলে কিছু নেই। কিন্তু কংগ্রসের প্রতীক অজানা নয় ভোটারের কাছে। সেটাই অন্যতম ভরসা। সমস্যায় রয়েছে তৃণমূলও। তাঁদের প্রার্থী গোপাল লামা আদতে জোটসঙ্গী ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা। পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়ে অ্যালার্জি থাকায় প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা নিজেরাই প্রচার করেছে।
তৃণমূলকে কার্যত পাহাড়ের রাস্তায় দেখাই যায়নি। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে পাহাড়ের বাসিন্দারা ভোট দিতে কতটা পছন্দ করবেন তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কর্মীদের কাছেই। ফলে তারা এ বার কৌশল বদলে প্রতীকের বদলে ব্যালটের কত নম্বরে তাঁদের প্রার্থীর নাম রয়েছে, সেটা প্রচার করেছে।
কাকতালীয় ভাবে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর নাম এক নম্বরে রয়েছে। ভোটের এমন জটিল খেলায় শেষ পর্যন্ত কে জয়ী হবে তা নিয়ে সকলেই কৌতুহলী। শিলিগুড়ির জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুমদার বলেছেন, ‘পাহাড়ের কিছু প্রত্যন্ত এলাকার বুথে এজেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা এখনও রয়েছে। আজ রাতের মধ্যেই সেই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা চলছে। তবে সমতলে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। এমনকী, চোপড়াতেও নয়।’
তৃণমূল কংগ্রেসের শিলিগুড়ির জেলা চেয়ারম্যান অলক চক্রবর্তী বলেন, ‘পাহাড় নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আবেগের কথা সকলেই জানেন। পাহাড়ের মানুষও জানেন। ফলে আমাদের কৌশল করার প্রয়োজন নেই। পাহাড় এবং সমতলের মানুষ আমাদের পাশেই এ বার থাকবেন।’
এদিন সকাল থেকে বার বার চেষ্টার পরেও পাহাড়ের বিজেপি সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান এবং শিলিগুড়ির সভাপতি অরুণ মণ্ডলকে ফোনে ধরা যায়নি। বিজেপির জেলা স্তরের এক নেতা বলেন, ‘পাহাড়ের অধিকাংশ বুথেই এজেন্ট দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, বিজেপির পোলিং বুথে এজেন্টের কোনও প্রয়োজন নেই। মানুষ প্রতীক দেখে ভোট দেবেন।’