• Vladimir Putin Biopic : ইউক্রেনে মিসাইল ছুড়ে নিজেই কাপড়েচোপড়ে! আসছে পুতিনের 'বায়োপিক'
    এই সময় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: দ্য ম্যান হু কম্যান্ডস ফিয়ার - যাঁর নামে গোটা দুনিয়া কাঁপে, তিনি নিজেই কাপড়েচোপড়ে করে ফেলছেন! মেঝেয় পড়ে থরথর করে কাঁপছেন- পরনে শুধু একটা নোংরা ভেজা ন্যাপি। এই তিনি মোক্ষম এক ক্যারাটের প্যাঁচে বিপক্ষকে ধরাশায়ী করছেন, তো পরক্ষণেই দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে নতুন বান্ধবীকে কোলে বসাচ্ছেন। বুক ঠুকে বলছেন, 'দিস ইজ় মাই নিউ ওয়াইফ।'আবার তার পরের মুহূর্তেই হাইটে অনেকটা বেশি পূর্বসূরির চোখে চোখ রেখে বলছেন, 'ওনলি আই ক্যান সেভ ইউ অ্যান্ড ইয়োর ফ্যামিলি ফ্রম প্রিজ়ন।' বিনিময়ে? একবারও চোখের পলক না ফেলে শর্ত দিচ্ছেন তিনি- 'আই মাস্ট বি প্রেসিডেন্ট।' হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কথাই হচ্ছে। ২৬ সেপ্টেম্বর ইউএস-ইন্ডিয়া-রাশিয়া-সহ ৩৫টি দেশে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে, পোল্যান্ডের বিখ্যাত ডিরেক্টর প্যাট্রিক ভেগা-র প্রথম ইংরেজি ছবি- 'ইনসাইড দ্য মাইন্ড অফ পুতিন।'

    টার্গেট অন্তত ৩০০ কোটি দর্শক- পুতিন হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়! বায়োপিক, আবার বলা হচ্ছে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারও! সম্প্রতি তার আড়াই মিনিটের ট্রেলার রিলিজ় করতেই হইচই পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। কিন্তু পুতিনের ভূমিকায় কে? আসল চমকটা সেখানেই। ইউক্রেনে বম্বিংয়ের ফুটেজগুলো আসল হলেও, পর্দার পুতিন পুরোপুরি AI-নির্মিত। দুনিয়া-কাঁপানো 'ডিক্টেটরের' ডিপফেক! তা-ও কি না বলে-কয়ে সিনেমায়?

    কেন AI? তার ব্যাখায় বলা হচ্ছে, 'এক্সপেরিমেন্ট'। পরিচালক প্যাট্রিক ভেগার কথায়, 'ইন্টারনেট আর্কাইভ থেকে কিছু মেটেরিয়াল নিয়ে আমরা প্রথমে হাই-রেজ়োলিউশন ডিপফেক মডেল তৈরির চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ঠিক মনের মতো হচ্ছিল না। গত দু'বছরের চেষ্টায় তারপর নিজেরাই এমন একটা এআই-প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছি, আপনারা নিশ্চিত চমকে যাবেন।

    সত্যি কথা বলতে কি, বাস্তবের হিউম্যান মডেল ব্যবহারের কথা ভাবতেই হয়নি।' নাকি, রাশিয়ান ডিক্টেটরের জুতোয় পা গলানোর সাহস নেই কারও! আলোচনাটা বরং চলতে থাকুক। এ দিকে ডিরেক্টরের দাবি, 'আল্ট্রা-রিয়েলিস্টিক AI ডিটেলিং-এর মাধ্যমে এই ছবিতে পুতিনের গত ৬ দশকের জীবন ও মননকে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ক্রেমলিনের লিডারকে খুব কাছ থেকে দেখবেন দর্শকরা। শুধু রাজনীতি বা রাষ্ট্রনীতি নয়, মিস্টার পুতিনের জীবনের বহু পার্সোনাল মুহূর্তও ধরা দেবে এই ছবিতে।'

    রাশিয়া, ইউক্রেন, সিরিয়া, ইজ়রায়েল, জর্ডন, পোল্যান্ডের মতো দেশের নানাবিধ লোকেশনে ছবির শুটিং হয়েছে মোটামুটি ৩ বছর ধরে। কিছু ফুটেজ দিয়েছে যুদ্ধ। ট্রেলার বলছে, এতে শিশু পুতিনের মনের কথা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে ২০২৪-এর প্রেসিডেন্ট ইলেকশনও। এমনকী, সিনেমায় যুদ্ধের ফ্রেম রিয়েলিস্টিক করে তুলতে ইউক্রেনের সিনেমাটোগ্রাফারকে দিয়ে বিশেষ ভাবে শুট করা হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে ধ্বংসের ফুটেজও।

    কিন্তু হঠাৎ পুতিনকে নিয়ে সিনেমা কেন? তাঁকে গ্লোরিফাই করতে? 'ভিলেন' বানানোর জন্য যে নয়, সে কথা বলাই বাহুল্য। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, যত বিতর্কিতই হোক, পুতিনকে নিয়ে ছবি মানে সেটা মার্কেট খাবেই। ডিরেক্টর প্যাট্রিক ভেগা অবশ্য বলছেন, 'পুতিন শুধু একটা সিনেমা নয়। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বিতর্কিত পলিটিশিয়ানের মেজাজ-মর্জি বোঝার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বের যে অনন্ত কৌতূহল রয়েছে, এটা তারই একটা রেসপন্স বলতে পারেন। যুদ্ধ আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের একটা কালো মেঘ ইদানীং ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। সেই মেঘটা খানিক কাটানোরও একটা প্রয়াস বলতে পারেন এই সিনেমা।'

    তা হলে তো পুতিনের বায়োপিকে 'নাভালনি-এপিসোড' কিংবা 'প্রিগোজ়িন-পর্ব'ও থাকার কথা! নিন্দুকেরা বলেন, শত্রুর শেষ রাখেন না পুতিন। তাই বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি কিংবা মস্কোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা ওয়াগনার-চিফ ইয়েভগেনি প্রিগোজি়নকে তাঁর নির্দেশেই খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেন অনেকেই। এ সবও থাকবে নাকি? ট্রেলারে অন্তত তেমন কোনও ইঙ্গিত নেই।

    তবে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর থেকে ধার করে বলা যেতে পারে, 'ইয়ে তো সির্ফ ট্রেলার হ্যায়, পিকচার আভি বাকি হ্যায়!'
  • Link to this news (এই সময়)