কারাবন্দি লোকসভার প্রার্থী অমৃতপাল সিং! জেল থেকে নির্বাচনে লড়াই সম্ভব, কী বলছে আইন?
এই সময় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪
‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধান অমৃতপাল সিংকে গত বছর এপ্রিলে মোগার একটি গুরুদ্বারের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। আপাতত জেলেই বন্দি আছেন তিনি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্তী হিসেবে পাঞ্জাবের খাদুর সাহেব আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে জেলবন্দি কোনও ব্যক্তি কি আদৌ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেন?এই বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের মধ্যে রয়েছে। এমনকি এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছেছে। এমন অসংখ্য রাজনীতিবিদ রয়েছেন যারা কারাগারের পিছন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং জিতেছেন।
জেলে থাকা রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে আইন কী বলে?প্রথমত দোষী সাব্যস্ত ন হলে কাউকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়না। এমনকি দোষী সব্যস্ত রাজনীতিবিদের জন্য কারাবাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অযোগ্যতা ছয় বছরের বেশি নয়। আইন অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হন এবং তার কমপক্ষে দু বছরের কারাদণ্ড হয় তাহলে মুক্তির তারিখ থেকে ছয় বছরের জন্য তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য হয়ে যান।
সেক্ষেত্রে শিখ নেতা অমৃতপাল সিংও লোকসভা নির্বাচনে লড়তে পারবেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। তবে কোনও দলের হয়ে নয়, নির্দল প্রার্থী হিসেবেই তাঁকে লড়তে হবে। বুধবার এমনটাই জানান মৃতপাল সিংয়ের আইনজীবী।
খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংয়ের আইনজীবী রাজদেব সিং খালসা দাবি করেছেন যে তিনি অসমের ডিব্রুগড়ে জেলবন্দি নেতা অমৃতপাল সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। এমনকি তাঁকে নির্বাচনে লড়ার জন্যও বলেছেন।
আইনজীবী খালসা বলেন, ‘আমি ডিব্রুগড় সেন্ট্রাল জেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি। আমি তাঁকে অনুরোধ করি খাদু সাহিব থেকে নির্বাচনে লড়ার জন্য। তিনি সংসদের সদস্য হতে পারবেন। তিনি আমার অনুরোধ রেখেছেন। উনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।’
তবে অমৃতপাল সিংয়ের বাবা তারসেম সিং এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, ছেলের সঙ্গে দেখা করে তারপরইভোটে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে কিছুবলতে পারবেন।
এই নিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ধারা ৪-এ উল্লেখ করা হয়েছে, যে দোষী সাব্যস্ত হওয়ারপরে রাজনীতিবিদদের বিধানসভা এবং সংসদ থেকে অযোগ্যতার সাথে সম্পর্কিত।
২০২৩ সালের রাহুল গান্ধী মামলা-২০২৩ সালের এপ্রিলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে সুরাটের একটি আদালত মানহনির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করার পরে সংসদ সদস্য হিসাবে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। এই আদেশটিভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ 102(1)(e) অনুসারে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১ এর ধারা ৪ এর সঙ্গে পঠিত ছিল। এই আদেশের অর্থ হল রাহুল গান্ধী ২০২৩ এপ্রিল থেকে আট বছরের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারবন না। জেল থেকে মুক্তিপাওয়ার পর ছয় বছরের অযোগ্যতার পর দুই বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট অযোগ্যতা স্থগিত করেছিল এবং রাহুল গান্ধীকে সংসদ সদস্য হিসেবে পুনর্বহাল করেছিল।