বিড়ি শিল্পীর মজুরি থেকে পরিযায়ী শ্রমিক, সমস্যা সমাধানে জঙ্গিপুরে এবার কে?
এই সময় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪
দেশে লোকসভা ভোট চলছে। আগামী ৭ মে হতে চলেছে তৃতীয় দফার নির্বাচন। ওই দিন রাজ্যের ৪ আসনে হতে চলেছে ভোটগ্রহণ। তৃতীয় দফার নির্বাচনে ভোট যে ৪টি আসনে ভোট হবে, তার মধ্যে অন্যতম জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্র। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই জোরকদমে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে ওই কেন্দ্রে। জনসংযোগের চেষ্টায় নেমে পড়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলই।২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫ লাখ ৬২ হাজার ৮৩৮। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির মাফুজা খাতুন পেয়েছিলেন ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৬ ভোট। কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের ঝুলিয়ে গিয়েছিল ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩৬ ভোট। আর সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ জুলফিকার আলি পেয়েছিলেন ৯৫ হাজার ৫০১ ভোট।
ফের খলিলুলের উপরেই আস্থানির্বাচনে ফের সেই খলিলুর রহমানকেই প্রার্থী করেছে রাজ্য়ের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে বিজেপির হয়ে লড়াইতে নেমেছেন ধনঞ্জয় ঘোষ। এদিকে কংগ্রেস প্রার্থী মোর্তাজা হোসেন। রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে জয় পরাজয়ে অন্যতম ফ্যক্টর বিড়ি শ্রমিক। বিড়ি মহল্লায় দীর্ঘদিন থেকেই শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু মালিকরা তা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য জঙ্গিপুর লোকসভার বিদায়ী সংসাদ তথা এবারের তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান, সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস, জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনরা এলাকার প্রভাবশালী বিড়ি শিল্পপতি। কিন্তু দাবি মতো মজুরি বৃদ্ধি না হওয়ায় বিড়ি মহল্লায় কার্যত অসন্তোষ রয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
উন্নয়ন নিয়ে একাংশের মধ্যে অসন্তোষতবে গত পাঁচ বছরে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে স্থানীয়দের একাংশের। বিড়ি শ্রমিকদের জন্য তৈরি করা হাসপাতালও অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এই লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, 'লালগোলার ময়াতে ভারত বাংলাদেশ বানিজ্য বন্দর চালু হয়েছে। উদ্বোধন করেছেন শান্তনু ঠাকুর। বানিজ্য বন্দর চালু হওয়ায় দু'দেশই আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।'
এলাকায় 'ভদ্রলোক' খলিলুরখলিলুর রহমান 'নিপাট ভদ্রলোক' হিসাবে এলাকায় পরিচিত। তবে উন্নয়ন নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। পাশাপাশি নিজের লোকসভা কেন্দ্রের বাইরে বহরমপুরে সুইমিং পুলের জন্য সাংসদ কোটার ৪৫ লাখ টাকা দেওয়ায় অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে, যা নিয়েও মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এই কেন্দ্রে বিড়ি ছাড়াও অন্য শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। স্থানীয়দের অনেকেরই দাবি, জাতীয় সড়কের দু'পাশে জায়গা থাকলেও সেভাবে শিল্প গড়ে ওঠেনি। ফলে কর্মসংস্থানের অভাবে জঙ্গিপুরে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সেক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৬২ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জঙ্গিপুরের মানুষ এবার কোন দলকে আশীর্বাদ করেন সেটাই দেখার।