এই সময়: সদ্য সারানো মসৃণ রাস্তা দিয়ে নির্বিঘ্নেই যাচ্ছিল গাড়িটা। হঠাৎই একটা স্পিড-ব্রেকারে ধাক্কা খেয়ে লাফিয়ে ওঠে। গাড়ির যাত্রীরাও আচমকা এমন ঘটনায় চমকে যান। আসলে চালক স্পিড-ব্রেকারটাকে ঠাহরই করতে পারেননি। ওই রাস্তায় ক’দিন আগেও একটা বড় গর্ত ছিল, সম্প্রতি সেটা সারানো হয়েছে। তার অদূরেই যে একটা স্পিড-ব্রেকার তৈরি হয়েছে, সেটা দিনের আলোতেও বোঝা যাচ্ছে না। সেখানে না আছে কোনও মার্কিং, না কোনও সতর্কতা। একেবারে কাছে না গেলে সেটার উপস্থিতিই মালুম হচ্ছে না।এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সল্টলেকের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিড-ব্রেকার তৈরি হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার উপর কেনও পেইন্ট করা হয়নি। অনেক জায়গায় আগে পেইন্ট করা হলেও সেটা ফিকে হয়ে এসেছে। ফলে হঠাৎ করে সামনে এসে পড়া স্পিড-ব্রেকারে ধাক্কা খেয়ে দুমদাম লাফিয়ে উঠছে গাড়ি। উঁচু স্পিড-ব্রেকারে অনেক সময়ে ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে গাড়ির নীচের অংশ। সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। সামনের আসনে সিট বেল্ট লাগানো থাকলেও পিছনের যাত্রীদের প্রায় কেউই তা লাগান না। ফলে, স্পিড-ব্রেকারের গুঁতোয় চোট পান অনেকেই।
এ ধরনের স্পিড-ব্রেকারের উপর সাধারণত সাদা রঙে মার্কিং করা হয়। বিশেষত পিচের তৈরি স্পিড-ব্রেকারে এই মার্কিং থাকে। পিচের উপর এমন মার্কিংয়ের জন্য বিশেষ ধরনের থার্মোপ্লাস্টিক পেইন্ট বা রেডিয়েটিং পেইন্ট ব্যবহার করা হয়। রাতে গাড়ির আলো ওই পেইন্টের উপর পড়লে বোঝা যায়। এমনিতে রাতে কম আলোয় স্পিড-ব্রেকার বুঝতে সমস্যা হয়। তেমনই, সূর্যের আলোতেও মসৃণ পিচের রাস্তায় খানিটা উঁচু স্পিড-ব্রেকার আদতে ক্যামোফ্লাজ করে থাকে। যার জেরে বেশি সমস্যায় পড়েন মোটরবাইক ও স্কুটার-চালকরা। বড়সড় দুর্ঘটনা না ঘটলেও চোট পান অনেকেই।
সল্টলেকের ‘অফিস পাড়া’ হিসেবে পরিচিত, নির্মাণ ভবন থেকে করুণাময়ী এবং তার সংলগ্ন এলাকাতেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিসের গেটের দু’পাশে স্পিড-ব্রেকার দেখা যায়। এ ছাড়া বাস টার্মিনাসের গেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফুটব্রিজ এবং স্কুলের সামনের রাস্তাতেও প্রয়োজন মতো স্পিড-ব্রেকার রয়েছে। তবে বেশিরভাগ জায়গাতেই মার্কিং নেই।
সমস্যা সমাধানের চেষ্টা অবশ্য হচ্ছে। খালধার লাগোয়া বেশিরভাগ স্পিড ব্রেকারেই মার্কিং করা রয়েছে। এ ছাড়াও, অন্য অনেক জায়গাতেই মার্কিং থাকলেও তা ফিরে হয়ে গিয়েছে। বিধাননগর পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বলতে পারব। তবে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করেই সাধারণত স্পিড-ব্রেকার বসানো হয়। এখন বেশিরভাগ জায়গাতেই ফাইবারের স্পিড ব্রেকার ব্যবহার হচ্ছে।’
পুরনিগমের এক আধিকারিকের কথায়, ‘স্পিড-ব্রেকারের উপর মার্কিং অনেক সময়ে ট্র্যাফিক বিভাগের তরফেও করা হয়, অনেক সময়ে আমরাও করে দিই। এখন কোথায় কোথায় তা দরকার, সেটা দেখে কাজটা করিয়ে নিতে হবে।’ বিধাননগর সিটি পুলিশের ডিসি ট্র্যাফিক নিমা নোরবু ভুটিয়া জানান, তিনি নিজে দেখে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।