বিশ্বে ক্ষুধার্তের সংখ্যা কত? চোখে জল এনে দেওয়া পরিসংখ্যান রাষ্ট্রসংঘের
এই সময় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪
ক্রমশ দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে গাজা। রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর এক প্রতিবেদনে এমনই চমকে দেওয়া তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে গাজায় অন্তত পাঁচ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ক্ষুধার জ্বলয় দিন কাটাচ্ছে। এই পরিস্থিতি দ্রুত দুর্ভিক্ষের দিকে যেতে পারে।ডব্লিউএফপি-র ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ইজরয়েলি সামরিক বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলার মধ্যে গাজায় মানবিক যে সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বঢঞছে। পরিস্থিতি যেকোনো সময় আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে গাজার বাসিন্দারা খাবারের সংকটে ভুগছে। তাদের মধ্যে ৫ লাক ৭০ হাজার মানুষের অবস্থা ভয়াবহ বিপর্যয়কর। তারা ক্ষুধার্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
আইপিসি বলছে গাজায় তীব্র সংঘাতের বর্তমন পরিস্থিতি এবং সীমিত মানবিক প্রবেশাধিকার চলতে থাকলে আগমী ছয় মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজাবাসী তাদের সমস্ত সম্পদ ব্যবহার করেছে। তাদের জীবিকা শেষ হয়ে গিয়েছে। সেখানকার স্থানীয় দোকান পাটগুলি খালি পড়ে আছে। লোকজন খাবার খুঁজে পাচ্ছে না। সেখানকার বাসিন্দারা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মীদের জানিয়েছে, যে তারা প্রায়শই পুরো দিন না খেয়ে থাকে। অনেক প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকে যাতে তাদের শিশুরা খেতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার, বিশুদ্ধ জল, স্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন সেবা তাদেরকাছে পৌঁছে দিতে না পারলে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়েছে।
মহামারির আশঙ্কা করে ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হোসাইন বলেন, গাজার বাসিন্দারা মহামারির খুব কাছাকাছি। পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ায় তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ছে। শিশু, মহিলা ও পুরুষদের মানবিক সংকটের যে মাত্রা তা নজিরবিহীন। একই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সুদানও।
আসন্ন এই বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করে ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচলক সিন্ডি ম্যাককেইন বলেন, গাজার কেউই আনহার থেকে নিরাপদ নয়। আমরা পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পারি না। বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষায় এখন মানবিক সহায়তা পাঠানোর সুযোগ প্রয়োজন। যেকোনো কিছুর চেয়ে এখন যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার তা হলো শান্তি। মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যাক্ত করে তিনি বলেন, জীবন বাঁচাতে গোটা বিশ্বকে এখনই একত্রিত হতে হবে।