Himanta Biswa Sarma : হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উপর বেজায় চটে বাঙালি মুসলিমরা, কেন?
এই সময় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উপর বেজায় চটে মিঁঞা মুসলিমরা। তাঁর একটি টিপ্পনি কিছুতেই ভুলতে পারছে না এই সম্প্রদায়। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, 'আগামী ১০ বছরেও মিঁঞা মুসলিমদের ভোটের প্রয়োজন হবে না BJP-র।' কিন্তু, কেন এমনটা বলেছিলেন তিনি।আসলে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি ছিল, 'যতক্ষণ মা পর্যন্ত মিঁঞা মুসলিমরা বাল্যবিবাহের মতো কুসংস্কারগুলি থেকে বেরিয়ে এসে নিজেরা শুধরাতে পারছে, ততদিন তাদের ভোটের প্রয়োজন নেই BJP-র।'মিঁঞা মুসলিমদের বক্তব্য অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য তাদের অস্তিত্বতে আঘাত করেছে। তবে পরবর্তীতে অসন্তোষ বাড়তে থাকায় মুসলিমদের এই সম্প্রদায়ের মনজয় করার চেষ্টায় নিজের স্ট্র্যাটেজি বদল করেছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বাংলাভাষী মুসলিমদের ঘরে ঘরে গিয়ে পর্যন্ত ভোটপ্রার্থনা করেছেন তিনি। যদিও এতে চিড়ে ভিজছে না।
কী প্রতিক্রিয়া মিঁঞা মুসলিমদের?নগাও লোকসভা কেন্দ্রের ধিংয়ে বসবাসকারী রুহুল আমিন বলেন, 'উনি বলেছেন মিঁঞা ভোটের প্রয়োজন নেই। এখন যখন দেখছেন আমাদের ছাড়া কোনও আসনে জেতা সম্ভব নয়, তখন আমাদের কাছে হাত পাততে এসেছেন। কেবলমাত্র ভোটের সময় আমাদের দরকার পড়ে আপনার। যখন আমাদের প্রয়োজনই নেই তখন আমরাই বা আপনাকে সমর্থন করব কেন?'
কোথা থেকে এল মিঁঞা শব্দটি?মিঁঞা শব্দটি অসমের বাংলাভাষী মুসলিমদের জন্য ব্যবহৃত একটি শব্দ। যে সকল মুসলিমরা অসমে বাংলা বলেন না তাঁরা এই সম্প্রদায়কে বাংলাদেশি প্রবাসী হিসেবে দেখে। মিঁঞা সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত ৫৬ বছরের আমিন বলেন, '২০২১ সাল থেকে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের অসম্মানজনক শব্দ সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। সব মনে আছে আমাদের।'
ফেব্রুয়ারি মাসে কী বলেছিলেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা?আমিন বলেন, 'গত ফেব্রুয়ারি মাসে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, মুসলিম মহিলারা শিশু জন্ম দেওয়ার মেশিন। আমাদের সম্প্রদায়ের মহিলারা এই কারণে অসম্মানিত হয়েছিলেন। যদি উনি মনে করেন, সকল মিঁঞা মহিলা তাঁদের জন্য ভোট দেবেন, তাহলে তা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ফেব্রুয়ারি মাসে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেছিলেন, আগামী দু'বছর মিঁঞা মুসলিমদের ভোট তাঁদের প্রয়োজন নেই। তার আগে বাল্যবিবাহ প্রথা বন্ধ করতে হবে। সেই লক্ষে অভিযানও চালাবে তাঁর সরকার।'
নগাঁওতে অর্ধেকের বেশি মুসলিম ভোটারগত মাসে একটি নির্বাচনী সভায় নিজের ভাষণে সামান্য বদল এনে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, 'মিঁঞা মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়েরা, মহিলারা এবং যুবরা উৎসাহ নিয়ে ভোটদান করছেন। নগাঁও সংসদীয় কেন্দ্রে সব মিলিয়ে ১৮.২ লাখ ভোটার রয়েছে। তার মধ্যে ১০.৫ লাখের বেশি মুসলিম ভোটার। শুক্রবার ভোটদান চলছে নগাঁওতে। এই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের বর্তমান সাংসদ প্রদ্যুৎ বরদোলুই ফের একবার দাঁড়িয়েছেন। তাঁর লড়াই হচ্ছে প্রাক্তন সহযোগী সুরেশ বোরার সঙ্গে। যিনি প্রথমে কংগ্রেসে ছিলেন এবং মাত্র তিনমাস আগেই BJP-তে যোগদান করেন।
মিঁঞা মুসলিমদের পিছিয়ে পড়া হিসেবেই ধরা হয় অসমে। তাঁদের আশঙ্কা, BJP ক্ষমতায় এলে সংবিধানের বদল করে মায়ানমারের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে এই মুসলিমদের জন্য।