নদীদূষণে ৬৫ কোটি ক্ষতিপূরণ! নিষ্ক্রিয়তার দায়ে NGT-র কাছে মুখ পুড়ল ED-র
এই সময় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: ‘অতিসক্রিয়তা’র জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-কে প্রায়ই নিশানা করে বিরোধীরা। এ বার নিজেদের ‘নিষ্ক্রিয়তা’র জন্য বিপাকে ইডি। প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টে (পিএমএলএ) পরিবেশগত আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বেশ কিছু ধারা থাকা সত্ত্বেও কেন সে দিকে তারা নজর দেয়নি, তা নিয়ে ইডিকে কড়া ভর্ৎসনা করল জাতীয় পরিবেশ আদালত (এনজিটি)।কোর্টের সাফ কথা, কারখানার অপরিশোধিত রাসায়নিক বর্জ্য ও দূষিত আবর্জনায় নদীদূষণ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। দূষণকারী সংস্থাকে মোটা অঙ্কের পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিতর্কের কেন্দ্রে আগ্রা, মথুরা ও বৃন্দাবনের একাধিক কারখানা। কেন উত্তরপ্রদেশের এই সব শহর থেকে বিনা বাধায় অপরিশোধিত বর্জ্য এসে যমুনায় মিশছে, সেই প্রশ্ন তুলে দ্রুত সমাধানের দাবিতে জাতীয় পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দু’জন।
তারই শুনানিতে ইডি-কে তলব করে বুধবার কড়া বার্তা দিয়েছে আদালত। এনজিটি-র চেয়ারপার্সন জাস্টিস প্রকাশ শ্রীবাস্তব, বিচারবিভাগীয় সদস্য জাস্টিস সুধীর আগরওয়াল এবং বিশেষজ্ঞ এ সেন্থিল ভেলের বেঞ্চ মামলার শুনানিতে বলে, প্রথমে না-থাকলেও ২০১২-র সংশোধনীতে পিএমএলএ-র মধ্যে পরিবেশগত আইন লঙ্ঘন রোধে কিছু ধারা যোগ করা হয়েছে।
২০১৩ থেকে তা লাগুও রয়েছে। অথচ গত ১১ বছরে একটি কেসেও এ নিয়ে ইডি হস্তক্ষেপ করেনি। কেন? এই প্রশ্ন তুলে ইডি-কে কড়া কথা শোনায় পরিবেশ আদালত। পরিবেশগত আইন লঙ্ঘন এমনিতে নন-কগনিজ়েবল অপরাধ। মানে, আদালতের নির্দেশ ছাড়া আইন লঙ্ঘনকারীকে গ্রেপ্তার করা যায় না। কিন্তু এই সংক্রান্ত ধারা পিএমএলএ-র মধ্যে জুড়ে যাওয়ার পরে কগনিজ়েবল অপরাধের মান্যতা পেয়েছে।
এনজিটি-র পর্যবেক্ষণ, ইডি চাইলেই পরিবেশ দূষণকারী কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার-সহ পদক্ষেপ করতে পারত। কিন্তু তা না-করে ইডি কার্যত দূষণকারীদেরই অবাধ দূষণের ছাড়পত্র দিয়েছে বলে মত কোর্টের। পরিবেশগত আইন না-মানার মতো অপরাধ করেও কিছু সংস্থা মুনাফা কামাচ্ছে বলেই পিএমএলএ আইনে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যেতে পারে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
মামলায় রায় দিতে গিয়ে রীতিমতো হিসেব-নিকেশ করে দূষণকারী সংস্থাগুলিকে আগ্রায় ৫৮.৪ কোটি এবং মথুরা-বৃন্দাবনে ৭.২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।