বৃহস্পতিবার দিনভর সংবাদ শিরোনামে কাঞ্চন মল্লিক। শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ভোট প্রচারে গিয়েই বিতর্কে জড়ান কাঞ্চন, কারণ হুড খোলা জিপ থেকে উত্তরপাড়ার বিধায়ককে নামিয়ে দেন কল্যাণবাবু। স্পষ্ট জানান, কাঞ্চনকে দেখে ‘গ্রামের মহিলারা রিঅ্যাক্ট করছে’। কী কারণে রিঅ্যাক্ট করেছে, সেকথা অবশ্য জানাননি কল্যাণ। তবে নিন্দকদের মতে শ্রীময়ীকে বিয়ে করার জেরেই নাকি কোণঠাসা কাঞ্চন।
কাঞ্চন বিতর্কে জড়াতেই খোঁজ পড়ে শ্রীময়ীর। জানা যায়, অসুস্থ শ্রীময়ী হাসপাতালে ভর্তি। বাইপাস লাগোয়া বেসরকারি হাসপাতালে গত রবিবার রাত থেকে ভর্তি রয়েছেন মিসেস মল্লিক। কল্যাণ প্রচার থেকে বাদ দেওয়ার পড়েই সোজা বউয়ের কাছে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন কাঞ্চন। অসুস্থ শ্রীময়ীকে সারাক্ষণ আগলে রাখছেন তারকা বিধায়ক।
কী হয়েছে শ্রীময়ীর? এমনিতেই শহরে গরম বাড়ছে। ৪০-৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় শ্যুটিং করতে গিয়ে নাজেহাল দশা হয় শ্রীময়ী। গরমে টানা সিরিয়ালের শুটিং করতে গিয়েই শরীরে জলের পরিমাণ কমে গিয়েছিল অভিনেত্রীর। সঙ্গে পেটে অসহ্য ব্যাথা, এক ঝটাকায় রক্তচাপ কমে কেলেঙ্কারি কাণ্ড ঘটেছিল শনিবার রাতে। রবিবার রাতে প্রচণ্ড বাড়াবাড়ি হয়ে যায়, মাথা ঘুরছিল শ্রীময়ীর। এরপরই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান কাঞ্চনের দাদা-বৌদি।
চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ শ্রীময়ী। চলেছে স্যালাইন, সব ঠিক থাকলে আগামিকাল অর্থাৎ শনিবারই ছাড়া পেয়ে যাবেন কাঞ্চন মল্লিকের স্ত্রী। ওদিকে কাঞ্চন মল্লিককে কল্যাণের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন শ্রীময়ী। আজতক বাংলাকে অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ওঁর খুব খারাপ লেগেছে। কারণ ও কাঞ্চনদাকে খুব ভালোবাসে’।
বিয়ে বিতর্কের জেরে তৃণমূলে অনেকটাই কোণঠাসা কাঞ্চন, দলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকে আগেই বাদ পড়েছিলেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক। এবার প্রিয় ‘দাদা’ কল্য়াণের প্রচারসঙ্গী হতে গিয়ে চরম অপমানের মুখে পড়লেন কাঞ্চন। বৃহস্পতিবার সকালে কোন্ননগরে প্রচারে যান কল্যাণবাবু। সেখানে কাঞ্চন তাঁর গাড়ি উঠলেই তৃণমূল প্রার্থী স্পষ্ট জানান, গাড়ি থেকে নেমে যেতে। কারণ গ্রামের মহিলারা কাঞ্চনকে দেখলেই ‘ভীষণ রিয়্যাক্ট’ করছেন। দ্বিতীয় স্ত্রী পিঙ্কি এবং ১০ বছরের ছেলে ওশকে ভুলে হাঁটুর বয়সী অভিনেত্রীর সঙ্গে কাঞ্চনের তৃতীয় বিয়ে ঘিরেই যাবতীয় গণ্ডোগোল।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন. ‘এর আগেও ওনাকে নিয়ে আমি প্রচারে বেরিয়েছিলাম। ওনাকে দেখলে গ্রামের মহিলারা ভীষণ রিএক্ট করছেন। আমি ওনাকে (কাঞ্চন মল্লিক) আগেই বলে দিয়েছিলাম, গ্রামে এসো না। আর শুধু আমার সঙ্গেই কেন প্রচারে থাকছে? অন্য দিনগুলোও তো ওর প্রচার করা উচিত। তখন তো ও থাকছে না। আমাকে নির্বাচন করতে হচ্ছে। মানুষের মনকে তো আমায় বুঝতে হবে। আমি তো কোনও ব্যক্তি বিশেষের জন্য নই। আমি সমষ্টিগত মানুষের জন্য। ব্যক্তিবিশেষের সুখ বা আনন্দের জন্য আমি সমষ্টিগত মানুষকে কষ্ট দিতে পারব না’।