• KKR-Punjab: বেয়ারস্টোর অবিশ্বাস্য শতরানে হার নাইটদের, টি-২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে রেকর্ড জয়...
    আজকাল | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: কলকাতায় ফিরল ব্রিটিশ শাসন। জস বাটলারের পর ঘাতক জনি বেয়ারস্টো। দুই ব্রিটিশের হাতেই ঘরের মাঠে হার কলকাতা নাইট রাইডার্সের। পঁচা শামুকে পা কাটল কেকেআরের। ইডেনের জায়ান্ট স্ক্রিনে শাহরুখ খানের থমথমে মুখ ভেসে উঠল। চোখেমুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। শেষবার বাটলারের শতরানে দলের হার দেখেছিলেন, এদিন সেই ভূমিকায় বেয়ারস্টো। ২২টি চার, ১৮টি ছয় মেরেও হারতে হবে কে ভেবেছিল! শুধুমাত্র আইপিএল নয়, টি-২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় পাঞ্জাব কিংসের। নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৬১ রান তোলে কেকেআর। জবাবে ৮ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে জয় পাঞ্জাবের। ১৮.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় পাঞ্জাব। এই ঐতিহাসিক দিনে গ্যালারিতে গরহাজির ফ্র্যাঞ্চাইজির মালকিন প্রীতি জিন্টা। নিশ্চয়ই হাত কামড়াবেন। এমন একটি রাতে শাহরুখ খানের সিনেমার একটি সংলাপ মনে পড়ে যাচ্ছে, "ম্যায় হুঁ না।" এদিন যেন ঠিক এটাই নিজের দলকে বলেছিলেন জনি বেয়ারস্টো। দু"ম্যাচ পরে লিয়াম লিভিংস্টোনের জায়গায় দলে ফেরেন। প্রত্যাবর্তনে ম্যাচ জেতানো শতরান। ৪৮ বলে ১০৮ রানে অপরাজিত ইংল্যান্ডের তারকা। বিধ্বংসী ইনিংসে রয়েছে ৯টি ছয়, ৮টি চার। ছক্কার রেকর্ড দেখল ইডেন। মোট ৪২টি ছয় হয় কেকেআর-পাঞ্জাব ম্যাচে। যা টি-২০ ক্রিকেটে রেকর্ড। তারমধ্যে পাঞ্জাব মারে ১৫ টি চার, ২৪ টি ছয়। আইপিএলে এক ইনিংসে ছক্কার রেকর্ড। অন্য প্রান্তে ২৮ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত শশাঙ্ক সিং। মারকুটে ইনিংসে ছিল ৮টি ছয়, ২টি চার। তৃতীয় উইকেটে ৩৭ বলে ৮৪ রানের পার্টনারশিপ। ২৬১ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে ঝড় তোলে পাঞ্জাব। ৩.৩ ওভারে ৫০ সম্পূর্ণ করে ফেলে প্রীতি জিন্টার দল। অর্শদীপ সিংয়ের পরিবর্তে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে প্রভসিমরন সিংকে নামায় পাঞ্জাব। শুরুতেই তাণ্ডব। ছয়ের পর ছয়। ১৮ বলে অর্ধশতরান করেন। ২০ বলে ৫৪ রান করে রানআউট হন পাঞ্জাবের ওপেনার। ইনিংসে ছিল ৫টি ছক্কা, ৪টি চার। প্রথম উইকেট হারানোর পরও ছন্দ ধরে রাখে পাঞ্জাব। নিজের খোলস ছেড়ে বেরোন জনি বেয়ারস্টো। দীর্ঘদিন পর ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটারের পুরোনো ঝলক দেখা যায়। মনে করিয়ে দেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দিনগুলোকে। যখন ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে বিপক্ষের বোলারদের ঘুম কেড়ে নিতেন। কিন্তু গত দু"বছরে রানের খরা চলছিল। ফর্মে ফেরার জন্য ক্রিকেটের নন্দনকাননকেই বেছে নেন বেয়ারস্টো। ২৩ বলে অর্ধশতরানে পৌঁছে যান। তারপর রণমূর্তি ধারণ করেন। ৪৫ বলে পৌঁছে যান একশোয়। তাতে ছিল ৮টি ছক্কা এবং চার। রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে দুর্ধর্ষ ইনিংস। হাতে চোটের জন্য এদিন মিচেল স্টার্ককে খেলানো হয়নি। কিন্তু অজি তারকার জায়গা নেমে ব্যর্থ দুষ্মন্ত চামিরা। বেগুনি জার্সিতে হাতেখড়িতে উইকেটের খাতা খুলতে পারেননি। বোলারদের মধ্যে একমাত্র সুনীল নারিন ছাড়া বাকিরা ব্যর্থ। মাত্র ৭.২ ওভারে ১০০ রানে পৌঁছে যায় পাঞ্জাব। দুশোর গণ্ডি পেরোতে লাগে ১৫ ওভার। শেষ পাঁচ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬১ রান। নাইটদের বোলিং নিয়ে ছেলেখেলা করল সেকেন্ড লাস্ট বয়রা। জনির দোসর শশাঙ্ক সিং। ২৩ বলে অর্ধশতরানে পৌঁছে যান। ১৭তম ওভারে ২৫০ রান সম্পূর্ণ করে পাঞ্জাব। বাকিরা ইতিহাস। টসে জিতে কেকেআরকে ব্যাট করতে পাঠান পাঞ্জাবের অস্থায়ী অধিনায়ক স্যাম কারন। দুর্দান্ত শুরু সুনীল নারিন এবং ফিল সল্টের। প্রথম উইকেটে রেকর্ড ১৩৮ রান যোগ করেন দুই ওপেনার। ৬টি ছয় এবং চারের সাহায্যে ৩৭ বলে ৭৫ রান করেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। ৩২ বলে ৭১ করলেন সল্ট। ইনিংসে ছিল ৪টি ছয়, ৯টি চার। শুরুটা ভাল করলেও বড় রান পাননি আন্দ্রে রাসেল (২৪) এবং শ্রেয়স আইয়ার (২৮)। ৩৯ রান করেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। রান পাননি রিঙ্কু সিং (৫)। কিন্তু কে ভেবেছিল ২৬১ রান করেও হারতে হবে। আট ম্যাচে তৃতীয় হার কেকেআরের। ইডেনে দ্বিতীয়। ছবি: অভিষেক চক্রবর্তী
  • Link to this news (আজকাল)