অনলাইন জালিয়াতির ৭৬ লক্ষ টাকার লেনদেন! রাজারহাট থেকে গ্রেপ্তার চক্রের মাথা
প্রতিদিন | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
অর্ণব আইচ: অনলাইন জালিয়াতির ৭৬ লক্ষ টাকার লেনদেন। জালিয়াতির চক্রের মাথাকে রাজারহাট থেকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। রাজিবুদ্দিন গাজি নামে ওই ব্যক্তির আরও ৬ জন সহযোগীকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর কলকাতার কাশীপুর থানায় হওয়া একটি জালিয়াতির অভিযোগের ভিত্তিতেই পুরো বিষয়টি সামনে আসে।
কাশীপুরের গোবিন্দ মণ্ডল লেনের বাসিন্দা এক ব্যক্তি অভিযোগ জানান যে, তাঁর কাছে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন আসে। ওই ব্যক্তি নিজেকে অনলাইন চাকরিদাতা বলে পরিচয় দেয়। প্রথমে তাঁকে বলা হয়, তিনি ইউটিউবে রিভিউতে লাইক করলেই টাকা পাবেন। প্রথমে তিনি কিছু টাকাও পান। তাঁর সঙ্গে ফোন ও অনলাইনে যোগাযোগ বাড়াতে শুরু করে সাইবার জালিয়াতরা (Cyber Crime)। ক্রমে তাঁকে বলা হয়, লগ্নি করলে তিনি বিপুল টাকা ফেরত পাবেন। তারা যে লগ্নি সংক্রান্ত ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, সেই প্রমাণ দিতে তাঁকে অনলাইনেই ভার্চুয়াল ডিজিটাল ওয়ালেট পাঠানো হয়। এছাড়াও ক্রিপ্টোকারেন্সিতে (Crypto currency) তাঁর টাকা পরিবর্তন করা হবে, এমন ভুয়া নথি প্রমাণ হিসাবে দেখানো হয়। ক্রমে তিনি তাদের বিশ্বাস করে ফেলেন।
ওই ব্যক্তি কয়েক দফায় অনলাইনে মোট ৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৯০০ টাকা পাঠান। তারা তার বদলে বিপুল টাকা ফেরত দেবে বলে জানিয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত অনলাইন জালিয়াতরা (Online Fraud) পুরো টাকাই হাতিয়ে নেয়। টাকা হাতে পাননি ওই ব্যক্তি। সোয়া চার লক্ষ টাকারও বেশি খুইয়ে ব্যক্তিটি কাশীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ভুয়া নথির ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সেই সূত্র ধরেই জানা যায়, ওই ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা দু লক্ষ টাকা গিয়েছে রাজিবুদ্দিন গাজি নামে ওই ব্যক্তির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। সেই সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়েই গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, বিভিন্ন জায়গা থেকে ৭৬ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে।
পুলিশের অভিযোগ, বহু ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা হাতিয়েছে ওই ব্যক্তি। জালিয়াতির ৭৬ লক্ষ টাকা এসে পৌঁছয় তার অ্যাকাউন্টে। রাজিবুদ্দিন ওই টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে না রেখে ফের তা পাঠিয়ে দেয় তার সহযোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। রাজারহাটের খড়িবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে রাজিবুদ্দিন গাজিকে গ্রেপ্তার (Arrest) করেন কাশীপুর থানার আধিকারিকরা। তাকে গ্রেপ্তার করে বিমানবন্দর থানা এলাকার সুমিত দাসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। জানা যায়, রাজিবুদ্দিন ও সুমিতই এই জালিয়াতি চক্রের দুই মাথা। তাদের জেরা করে ক্রমে হাতিয়াড়ার তুহিন হোসেন, নিউটাউনের শামিম হোসেন, দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্কের পূর্ব পুটিয়ারির বিভাস অধিকারী, বজবজের মাকসুদ আলম, রাজারহাটের নারায়ণপুরের নওয়াজ সিদ্দিকিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এদের প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই গিয়েছে জালিয়াতির টাকা। সেই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।