এই সময়: ইজ়রায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ বেড়েই চলেছে ইউএস ইউনিভার্সিটিগুলোতে। এ বার ইউএসের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে প্যালেস্তাইনপন্থী বিক্ষোভে 'যোগ' দেওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হলো এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছাত্রীকে।সপ্তাহ দেড়েক আগে প্যালেস্তাইনপন্থী বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। গাজ়ায় ইজ়রায়েলি আগ্রাসনের বিরোধিতা এবং ইজ়রায়েলের সঙ্গে ইউএস বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক যোগসূত্র ছিন্ন করার দাবিতে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা। সেই বিক্ষোভের ঢেউ-ই ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসেও। তামিলনাড়ুর মেয়ে অচিন্ত্যা শিবলিঙ্গম এবং হাসান সৈয়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ- প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভে বসেছিলেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেনিফার মরিল জানান, ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে ইউনিভার্সিটি পলিসি ভেঙেছেন এই দুই পড়ুয়া। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ক্যাম্পাসে ঢোকাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া হাউজ়িং এখনই ছাড়তে হচ্ছে না তাঁদের। প্রিন্সটন থেকে পাবলিক অ্যাফেয়ার্সে মাস্টার্স করছেন শিবলিঙ্গম, আর সৈয়দ পিএইচডি পড়ুয়া। মরিলের দাবি, 'পড়ুয়াদের বহুবার সতর্ক করা হয়েছিল, তাঁরা শোনেননি। এখন দু'জনকে গ্রেপ্তার করার পর বাকি প্রতিবাদীরা নিজে থেকেই ক্যাম্পিং গিয়ার ও প্রতিবাদের বাকি সামগ্রী নিয়ে সরে গিয়েছেন।'
তবে, অন্যত্র প্রতিবাদ থামছে না। হার্ভার্ড, ইয়েলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও প্রতিবাদ জারি। পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগও জোরদার হচ্ছে। জর্জিয়ায় ইমোরি ইউনিভার্সিটিতে প্যালেস্তাইনপন্থী পড়ুয়াদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ অযথা বলপ্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ। এক প্রফেসরকে ধাক্কা মেরে মাঠে ফেলে তাঁকে হ্যান্ডকাফ পরানোর ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে গণহারে গ্রেপ্তারি এবং পুলিশি অ্যাকশনের প্রতিবাদে অভিযোগ দায়ের করেছে 'প্যালেস্তাইন লিগাল' নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন। প্যালেস্তাইনিদের অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করে তারা। ইউএস এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের কাছে 'প্যালেস্তাইন লিগাল'-এর দাবি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশি অ্যাকশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পড়ুয়া বিক্ষোভে উঠছে 'ফ্রি প্যালেস্তাইন' স্লোগান। তবে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই বিক্ষোভ সীমাবদ্ধ নেই। প্যালেস্তাইনের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে ইউএসের নানা প্রান্ত থেকে ছাত্র, প্রফেসর এবং সমাজকর্মীরা ওয়াশিংটন ডিসিতে এসে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখান।
তবে, ইউএসে ইজ়রায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ জোরদার হলেও ইজ়রায়েলকে অস্ত্র সাহায্য বন্ধ করেনি ইউএস। আর ইজ়রায়েলও গাজ়ায় হামলা জারি রেখেছে। গাজ়ায় অন্যতম জনবহুল শহর মিশর সীমান্তে অবস্থিত রাফায় হামলার হুমকি দিয়েছিল তারা। বৃহস্পতিবার থেকে রাফায় টানা শেল-বর্ষণ জারি। গাজ়ায় ইজ়রায়েলি আগ্রাসন ইতিমধ্যে অন্তত ৩৪,৩৫৬ জনের প্রাণ কেড়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, গাজ়ার গণকবরগুলোতে পাওয়া ফরেন্সিক তথ্যপ্রমাণ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন, যদিও তা করা যাবে কি না, থাকছে প্রশ্ন।