পরীক্ষায় শুধুমাত্র 'জয় শ্রীরাম' লিখলেই পাশ! যোগীরাজ্যে ফার্মাসি পরীক্ষা ঘিরে শোরগোল
এই সময় | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: 'রাম-রাজ্যে' কী না হয়! স্রেফ তাঁর নাম লিখে পরীক্ষার বৈতরণীও পেরনো যায়! অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনাটি সত্যি। ঘটনাস্থল, উত্তরপ্রদেশ। সেখানকারই চার জন ছাত্র ফার্মাসি পরীক্ষার খাতায় শুধু 'জয় শ্রীরাম' লিখে ৫০ শতাংশের উপরে নম্বর পেয়ে 'পাশ' করেছেন পরীক্ষায়। এই খবর সামনে আসতেই শুরু হয়েছে শোরগোল। অনেকেই আবার মন্তব্য করেছেন, 'ও, তা হলে ডাবল ইঞ্জিন এ ভাবেও চলে!'যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের জওনপুর শহরের বীর বাহাদুর সিং পূর্বাঞ্চল ইউনিভার্সিটিতে গত বছর ফার্মাসি পেপারের পরীক্ষা হয়। ওই বিষয়ের ১৮ জন পরীক্ষার্থীর খাতা দেখার জন্য আরটিআই করেন দিব্যাংশু সিং নামে এক প্রাক্তন ছাত্র। পাশপাশি, তিনি এ-ও অভিযোগ করেন, ঘুষের মাধ্যমে কিছু ছাত্রকে এই পরীক্ষায় পাশ করানো হয়েছে। আরটিআই-এর ফলে খাতাগুলো সামনে আসতেই দেখা যায় যে ফার্মাসির ডিপ্লোমা পরীক্ষায় চার ছাত্র উত্তরপত্রে একাধিক জায়গায় 'জয় শ্রীরাম' এবং ভারতীয় ক্রিকেটার যেমন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও হার্দিক পাণ্ড্যিয়ার নাম লিখে চলে এসেছিলেন। প্রশ্নের কোনও উত্তর দেওয়ার তাঁরা চেষ্টাই করেননি। তা সত্ত্বেও তাঁদের ৫০ শতাংশের বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে! ফলত, তাঁদের প্রত্যেকে পাশও করেছেন।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই দুই প্রফেসর বিনয় শর্মা ও আশিস গুপ্তাকে সাসপেন্ড করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভিসি বন্দনা সিং একটি চ্যানেলকে জানিয়েছেন, এই দু'জনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমতি এলেই তা কার্যকর করা হবে। নম্বর তাঁরাই দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এ দিকে ওই চার ছাত্রেরই নম্বর স্বাভাবিক ভাবেই শূন্য করে দেওয়া হয়েছে।
দিব্যাংশু সব তথ্য উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপালকে জানিয়েছিলেন। তিনি পদাধিকার বলে ওই স্টেট ইউনিভার্সিটির আচার্য। এই ঘটনায় তদন্তের দাবি করেছেন ওই প্রাক্তন ছাত্র। ওই দাবিতে সাড়া দিয়ে রাজভবন থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশেই দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বলা হয়েছে, 'আমরা দুই শিক্ষককে চাকরি থেকে বহিষ্কার করার প্রস্তাব দিয়েছি। রাজভবন অনুমতি দিলেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে 'রাম রাজ্যে'র বিভিন্ন পরীক্ষায় কতটা স্বচ্ছতা অবলম্বন করা হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, 'রামের নাম লিখলে যদি পরীক্ষাতেও পাশ করিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে ভবিষ্যতে কী হবে?' আবার এমন অভিযোগও উঠেছে, ওই দুই প্রফেসর ঘুষ নিয়েছিলেন পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য। এই বিষয়ে যোগী প্রশাসন কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।