• তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়েছেন ভোটাররা, আশাবাদী শঙ্কর, বাম ভোট রামে যায়নি, দাবি অশোকের
    বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি: বামেদের সঙ্গে জোট করে কতটা লাভবান হবে কংগ্রেস? শুক্রবার দার্জিলিং লোকসভা আসনে দুপুর না গড়াতেই এই প্রশ্ন জেলা কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে ঘুরল। সকাল থেকে শিলিগুড়ি মহকুমায় বিভিন্ন বুথে ভোটের গতিবিধি যাচাই করে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, বামেদের সব ভোট কংগ্রেস প্রার্থী পাবেন না। অন্যদিকে, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপিকে বামেরা সমর্থন করে না। তাই বামেদের ভোট রামে যায়নি। 

    ভোটের দু’দিন আগে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন করে বাম মনোভাবাপন্ন ভোটারদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য। অশোকবাবু যাই বলুন না কেন, কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের বড় অংশের এদিনের আশঙ্কা থেকে তাই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে বামেদের ভোট কি রামে গেল? 

    রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কারণ, এই আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ায় আগেই দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টে ফাটল ধরেছে। ফরওয়ার্ড ব্লক সরাসরি এই জোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে সিপিএম ছাড়া অন্য বাম শরিকদের সেভাবে ময়দানে দেখা যায়নি। সিপিএম প্রচারে থাকলেও তরুণ প্রজন্মের নেতা-কর্মীদের সেভাবে কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে দেখা যায়নি। অনেক জায়গায় ভোটারদের বাড়ি ভোটার স্লিপও দেয়নি সিপিএম। 

    এদিন বিভিন্ন জায়গায় ভোট দিয়ে আসার সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের একটা বড় অংশ স্বীকার করেছে, কংগ্রেসকে ভোট দিলে তৃণমূলের সুবিধা হবে। তাই সেটা চাইনি। শিলিগুড়ি পুরসভার ১৯, ২৯ নম্বর ওয়ার্ড এখনও বামেদের যথেষ্ট আধিপত্য আছে। এখানকার অনেক সিপিএম নেতা-কর্মী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মও জানিয়েছে, কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করিনি। 

    তবে বামেদের ভোট রামে গিয়েছে, এটা সরাসরি কেউই বলছেন না। কারও  ইঙ্গিত নোটায়, কারও ইঙ্গিত বিজেপিতে। তবে বিজেপি বিধায়কের আবেদনে সাড়া দিয়ে যে এই সিদ্ধান্ত নয়, তা সিপিএমের তরুণ প্রজন্মের কর্মী-সমর্থকরা জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, কংগ্রেসকে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনেক আগের। সিপিএমের এক যুব নেতা বলেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে কংগ্রেস এ রাজ্যে বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। তাই আমাদের কাছে তৃণমূলের মতো কংগ্রেসও শত্রু। 

    যদিও রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা অশোকবাবু দাবি করেন, বামেদের ভোট রামে যায়নি। তিনি বলেন, বিজেপি মতো দুর্নীতিগ্রস্ত দলকে বামেরা কোনওভাবে সমর্থন করে না। তাই  তাদের পাশে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বাম সমর্থকরাও জানেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে লড়তে হলে বাম-কংগ্রেস জোটকে শক্তিশালী করতে হবে। তাই তাঁরা কংগ্রেসকে এদিন ভোট দিয়েছেন। 

    শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের পাল্টা দাবি, বামেদের ভোট বিজেপি পেয়েছে। সিপিএমের কিছু নেতার স্বার্থে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোট হয়েছে।  সিপিএমের তরুণ প্রজন্মের নেতা-কর্মী ও সর্মথকরা ভালো চোখেই নেননি। তাই তাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। যদিও কংগ্রেসের দাবি, তাদের জোট এবার ভালো ফল করবে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা শিলিগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলার সুজয় ঘটক বলেন, আমরা এদিন উৎসবের মেজাজে ভোট করিয়েছি। কে কাকে ভোট দিয়েছে তা  রেজাল্ট বের হলেই বোঝা যাবে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)