• এবার পাহাড়ে ভোট কমবে বিজেপির, মানলেন গুরুং
    বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • সুব্রত ধর ও দেবরাজ ছেত্রী:  শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং: এবার পাহাড়ে ভোট কমবে বিজেপির। শুক্রবার ভোটগ্রহণ পর্ব পর্যবেক্ষণের পর একথা বলেন বিজেপির অন্যতম জোটসঙ্গী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং। এদিকে, কার্শিয়াংয়ে বসে নিশ্চুপে ভোট ময়দান পরিচালনা করেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (বিজিপিএম) প্রধান তথা জিটিএর চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপা। দিনভর সেখান থেকে গোটা পাহাড়ের ভোট প্রক্রিয়া তদারকি করেন। তাঁর দাবি, পাহাড়ে এবার জোড়াফুল ফুটবেই। 

    একদা পাহাড়ের দাপুটে নেতা ছিলেন বিমল। বর্তমানে পাহাড়ের রাজনীতিতে তাঁর গুরুত্ব আগের মতো ততটা নেই। জিটিএ, পুরসভা বা  পঞ্চায়েত—তাঁর দলের পরিচালনাধীন কোনও স্থানীয় প্রশাসনও নেই। তারপরেও পাহাড়ের রাজনীতিতে বিমল গুরুং যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। এবার ভোটের দামামা বেজে যাওয়ার পরও তাঁকে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি সেই বিজেপিরই প্রার্থী রাজু বিস্তাকে সমর্থন করেন। শুধু তাই নয়, ভোট-ময়দানে তিনিই ছিলেন বিস্তার অন্যতম সেনাপতি। এদিন সকালে তিনি পাতলেবাস কমিউনিটি হলে নিজের ভোট দেন। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ কাটানোর পর সিংমারিতে দলীয় কার্যালয়ে যান গুরুং। 

    তিনি বলেন, ‘গোর্খাল্যান্ড ও ১১টি জনজাতিকে এসটি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতেই চতুর্থবারের জন্য বিজেপিকে সমর্থন করেছি। তাই বিজেপির হয়ে ভোট করেছি। তবে এবার প্রতিযোগিতা কঠিন। তাই ২০১৯ সালের মতো ভোট হবে না। এবার বিজেপির ভোট অনেক কমবে।’ শুধু বিমল নন, শুক্রবার ভোটগ্রহণ পর্ব শেষে এমন অনুমান পাহাড়ের অনেকেরই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছে, দার্জিলিং লোকসভা আসনের একাংশ পাহাড়। বাকিটা সমতল অঞ্চল। পাহাড়ে তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পং। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দার্জিলিং ও কার্শিয়াং বিজেপির দখলে গেলেও এখন কেবল দার্জিলিংয়ে তারা প্রভাব ধরে রাখতে পেরেছে। কারণ, কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক নিজেই নির্দল হিসেবে এই ভোটে লড়ছেন। কালিম্পংয়ে বেশি প্রভাব রয়েছে অনীত থাপার বিজিপিএমের। তাছাড়া এবার প্রার্থীদের মধ্যে পাহাড়ের প্রতিনিধি একাধিক। এসব ফ্যাক্টরের কারণেই পদ্ম শিবিরের ভোট কমবে বলে মনে করছেন তাঁরা। 

    অন্যদিকে, বর্তমানে পাহাড়ের ‘সম্রাট’ অনীত থাপা! তাঁর দলের দখলেই রয়েছে জিটিএ, পুরসভা ও পঞ্চায়েত। তিনি তৃণমূলের দোসর। এদিন কার্শিয়াংয়ে নিজের বুথে ভোট দেওয়ার পর কয়েকটি বুথে ঘোরেন তিনি। তারপর মোটরস্ট্যান্ডের কাছে কন্ট্রোল রুমে বসেন। ফোনে দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, তিনধরিয়া প্রভৃতি এলাকার কর্মীদের থেকে তিনি ভোটের গতিবিধি সম্পর্কে খোঁজখবর করেন। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মিরিক, কালিম্পং, লাভা সর্বত্রই সকাল থেকে বুথের সমানে ছিল ভোটারদের লম্বা লাইন। মহিলাদের ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য। অনীত থাপা বলেন, ‘এতদিন পাহাড়ে বিজেপিকে আমরা জিতিয়েছি। এবার আমরাই ওদের পাহাড়ছাড়া করব। কিছু জায়গায় বিজেপি টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। কাজেই এখানে আমাদের প্রার্থী গোপাল লামা ব্যাপক লিড পাবেন বলে আশা করছি।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)