• মুখ্যমন্ত্রীর ভোকাল টনিকের অপেক্ষায় কুলটি, আসানসোল
    বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: তাপপ্রবাহে জ্বলছে শিল্পাঞ্চল। শুক্রবার আসানসোলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই পরিস্থিতিতেই আজ শনিবার শিল্পাঞ্চলের জোড়া সভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তীব্র তাপপ্রবাহের কথা মাথায় রেখে কুলটি ও আসানসোলের দু’টি সভাস্থলেই বিশেষ মেডিক্যাল ইউনিট রাখা হচ্ছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীর পাশাপাশি থাকবে অ্যাম্বুলেন্সও। কোনও কর্মীর যাতে সমস্য না হয় সেজন্য সভাস্থলগুলিতে রাখা হচ্ছে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা। ঠান্ডা জলের পাশাপাশি প্রয়োজন হলে কর্মীদের দেওয়া হবে ওআরএস। ভোটের আগে নেতাকর্মীদের প্রতি বাড়তি যত্ন নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। তীব্র তাপপ্রবাহকে ডোন্ট কেয়ার করেই মুখ্যমন্ত্রী পর পর দু’টি সভা করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই অদম্য জেদ দেখে কর্মীরা গরম উপেক্ষা করে তাঁর সভায় আসতে আগ্রহী হবেন বলে নেতাদের দাবি। 

    মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কুলটিতে দুপুর বারোটায় ও আসানসোলে দুপুর দুটোয় সভা করবেন। আমরা সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছি। কর্মীদের জন্য বাস ও গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কাছ থেকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য মহিলারা মুখিয়ে রয়েছেন।

    মুখ্যমন্ত্রী শেষ বার কুলটি এসেছিলেন ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে। সেবার প্রার্থী উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে সভা করার পর কুলটিতে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই বারই শেষ, তারপর থেকে কুলটিতে যতবার বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচন হয়েছে ততবার বিজেপির থেকে পিছিয়ে থেকেছে তৃণমূল। শাসকদলের নেতাদের কোন্দল দলকে বার বার বিপাকে ফেলেছে। বহু ক্ষেত্রেই সাবোতাজ করার অভিযোগ উঠেছে। কুলটির সেই রাজনৈতিক সমীকরণ ঘোরাতে ফের মুখ্যমন্ত্রী আসছেন কুলটি। সাধারণ কর্মীদের আশা, মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখে নেতারা এক ছাতার তলায় এসে যুদ্ধে নামলে কুলটিতেও জয় পাবে তৃণমূল কংগ্রেস। 

    গতবারের সভায় কুলটির জলসঙ্কট মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরসভার দাবি, তারপর কুলটি বিধানসভা এলাকায় ৩৮ হাজার বাড়িতে জলের নতুন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তাও কিছু এলাকায় সমস্যা রয়েছে। এবার কুলটিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন সে দিকেই তাকিয়ে সবাই। তারপর দুপুর দুটোর সময়ে আসানসোলের ঊষাগ্রামের মাঠে সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী। 

    মুখ্যমন্ত্রীর ভোকাল টনিক কতটা কাজ করে তা বুধবার থেকেই দেখেছে শিল্পাঞ্চলবাসী। বুধবার দুপুরে দলনেত্রী জানিয়ে গিয়েছিলেন, পশ্চিম বর্ধমানে নির্বাচন জমেনি। এরপরই বুধবার রাতে দুর্গাপুরে জরুরি বৈঠক হয়। বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলে বৈঠক করেন খোদ রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তারপর থেকেই সব নেতার ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’। যে সব নেতারা এক টেবিলে বসছিলেন না, তাঁরা এক টেবিলে চায়ের আড্ডায় মশকরা করছেন। দলের রণনীতি ঠিক করছেন। নিজেরাই সভা, প্রচারের আয়োজন করে শত্রুঘ্ন সিনহাকে জেতাতে আদা জল খেয়ে নেমেছেন। 

    যা দেখে বিজেপি নেতাদের গা জ্বালা করছে। অনেকেই ফেসবুকে পোস্ট করছেন, ‘তৃণমূলকে দেখে আমাদের দলের নেতাদের শেখা দরকার। ওরা সারা বছর লড়াই করে, আর নির্বাচন এলেই এক হয়ে লড়াই করে।’ অনেকে সেই নেতার পোস্টে কমেন্ট করেছেন, আমাদের নেতারা সারাটা বছর এক হয়ে চলল। আর যেই অন্য কেউ টিকিট পেল হয় নির্দল হয়ে নেমে পড়ল, না হলে বসে গেল।
  • Link to this news (বর্তমান)